Archiveবেঙ্গল লাইভ Special

কৌলিন্য হারাচ্ছে উত্তরের “চা”, সঙ্কটে চা শ্রমিকরা

nblive বিশেষ প্রতিবেদনঃ ডুয়ার্সের সিটিসি চা। যে পেয়েছে, সে-ই মজেছে। বিশ্বজোড়া খ্যাতি তার। স্বাদে গন্ধে ভূবন মাতিয়েছে এই একটি কুঁড়ি দুটি পাতার সংমিশ্রন। কিন্তু ইদানীং কৌলিন্য হারাচ্ছে বিশ্বমানের এই চাপাতা। কেন? কারণ, সেই মন মাতানো স্বাদ ও মেজাজ তাতানো ঘ্রাণ আর মিলছে না এ পাতায়। সৌজন্যে যন্ত্র দানব। বাগান থেকে চাপাতা সংগ্রহের পদ্ধতিতে যান্ত্রিক কৃত্রিমতা প্রবেশ করায় আপোষ করা হচ্ছে গুণমানের সঙ্গে। কীভাবে? আগে বাগান থেকে নিজ হাতে বেছে বেছে একটি কুঁড়ি দুটি পাতা তুলতেন ফুলকলিরা, মানে চা বাগানের শ্রমিকরা। ফলে কারখানায় যেত শুধু উপযুক্ত ও সর্বোত্তম পাতা। যা থেকে তৈরি হতো সর্বোত্তম মানের সিটিসি চা। কিন্তু এখন ফুলকলিদের জায়গা নিয়েছে যন্ত্রকাঁচি। যান্ত্রিক কাঁচির সাহায্যেই গাছ থেকে পাতা কেটে সংগ্রহ করা হচ্ছে। আর তা করতে গিয়ে কোনও বাছবিচার না থাকার ফলে কচিপাতা, বুড়োপাতা, ভালো পাতা, মন্দ পাতা – সবই চলে যাচ্ছে কারখানায়। তাতেই নষ্ট হচ্ছে গুণমান।
যন্ত্র সভ্যতার অনুপ্রবেশে শুধু যে চাপাতারই গুণমান ধর্ষিত হয়েছে তা নয়। এর ফলে চরম সঙ্কটে পড়েছেন চা শ্রমিকরাও। কারণ তাঁরা কাজ হারাচ্ছেন। এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িয়ে আছেন চার লক্ষেরও বেশি শ্রমিক। জলপাইগুড়ি সহ ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে আছে প্রায় ৩০০ টি চা বাগান, যেখান থেকে এই বিশ্বমানের সিটিসি চাপাতা সংগ্রহ করা হয়। এখান থেকে প্রতি বছর ২৪০ মিলিয়ন কেজি চা পাতা বিদেশে রপ্তানি হয়। যা থেকে প্রচুর বিদেশী মুদ্রা উপার্জন করে আমাদের দেশ। জোগান বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা দ্রুত পূরণ করতে গিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে যন্ত্রকাঁচি। সেই কাঁচিতে ছাঁটা হচ্ছে শ্রমিকদেরও। কিন্তু গুণগত মান যদি ধরে রাখা না যায় তাহলে বিশ্ববাজারে এই চাহিদা কি থাকবে?

Back to top button