টি স্টল থেকে টু পাইস হোটেল – হাত বাড়ালেই মদ-গাঁজা, নেশায় বুঁদ তরুণ সমাজ
Nblive ওয়েব ডেস্কঃ সন্ধ্যে নামলেই নেশায় ডুবছে রায়গঞ্জ। ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠেছে অবৈধ মদের দোকান। কসবা মোড় থেকে শিলিগুড়ি মোড়, শহর লাগোয়া ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের আশেপাশের দোকান, ধাবা প্রায় প্রত্যেকটিতেই চলছে বেআইনি মদ বিক্রির রমরমা কারবার। কোথাও চা-এর দোকানের আড়ালে চলছে ব্যবসা তো কোথাও আবার হোটেল এর নামে চলানো হচ্ছে মদের ব্যবসা।
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া কসবা মোড় এলাকায় সন্ধ্যের পর থেকেই চায়ের অথবা খবারের হোটেলগুলির সামনে প্রচুর মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। প্রথমে দেখলে মনে হয় স্থানীয়রা নিছক আড্ডা দেওয়ার জন্যই হয়ত এসেছে। কিন্তু কিছুটা সময় গড়াতেই সব কিছু পরিষ্কার। দোকানদার নিজেই চায়ের গ্লাসে করে সরবরাহ করছে মদ। গভীর রাত পর্যন্ত চলে এই কারবার। অপরদিকে শিলিগুড়ি মোড় লাগোয়া জাতীয় সড়কের ওপর গজিয়ে ওঠা ধাবাগুলিতেও মদের কারবার দীর্ঘদিনের। এছাড়াও শহরের ভেতরেও ভুঁয়ো চায়ের দোকানও রয়েছে বেশ কয়েকটি। যেমন সূদর্শণপুর, গীতাঞ্জলী সিনেমা হল এলাকা, স্টেট বাস স্ট্যান্ড সহ শহরের মাঝে একাধিক এলাকাতে রয়েছে এমন অনেক চায়ের দোকান যেখানে আদতে মদ বিক্রি করাই প্রধান উদ্দ্যেশ্য।
রায়গঞ্জ পৌর এলাকার বিভিন্ন পাড়ার ভেতরেও বেশ কিছু চায়ের দোকান গজিয়ে উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সারাদিনই বেপাড়ার ছেলেদের ভিড় এলাকায় লক্ষ্য করা যায়। এরপর সন্ধ্যে নামতেই শুরু হয়ে যায় নেশার কারবার। পাড়ার ভেতরে মদ বিক্রি না হলেও রমরমিয়ে চলছে গাঁজা সহ অন্যান্য নেশা জাতক দ্রব্যের ব্যবহার। শহরের মাঝে এই সব স্থানে স্কুল পড়ুয়া অথবা কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যেই আড্ডা দেওয়ার প্রবনতা বেশি লক্ষ্য করা যায়। অনেক সময়ই তারা নিজেদের মধ্যে ঝামেলায় জড়িয়ে পরে। মাঝেমাঝেই এই ঝগড়া তুমুল আকার ধারণ করে।
প্রাইভেট টিউশনে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেড়িয়েই এইসব দোকানে আড্ডা মারার গল্পও শোনা গিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাদশ শ্রেণীর এক যুবক জানায়, আজ প্রাইভেট টিউশন ছিলনা। এক্স্যট্রা ডেটের নাম করে আড্ডা দিতে এসেছি। ঠিক সময়ে বাড়ি ঢুকে যাব।
বেশ কয়েকদিন আগেই রায়গঞ্জ শহরেরই প্রথম সারির এক স্কুলের চার পড়ুয়া দোকানে বসে মদ খেতে গিয়ে ধরা পরেছিল। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে তাঁদেরকে পরে স্কুল থেকে সাসপেন্ডও করা হয়।
শিক্ষক সমাজ থেকে অভিভাবককূল প্রত্যেকেরই বক্তব্যে শোনা গিয়েছে আক্ষেপের সুর। তাঁদের কথায়, ঘরে বাইরে দুইয়েই পড়ৃয়াদের কথা বার্তা আদব কায়দার মধ্যে পরিবর্তন হয়েছে ঢের। প্রায় দিনই টিউশনের নাম করে বাড়ির বাইরেই থাকতে পছন্দ করছে তারা। নেশা জাতীয় দ্রব্যের সাথে যুব সমাজের আত্মীয়তা ক্রমশ বেড়েই চলছে। শহরের ভুঁয়ো চায়ের দোকান পাট গুলি সহ নেশা জাতীয় দ্রব্যাদি বিক্রি করা হয় এমন দোকানপাট গুলি পুলিশের উদ্যোগে অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ।