নজরে উত্তরের তারকারা
আর মাত্র কয়েক ঘন্টা। তারপরই নির্ধারণ হয়ে যাবে, বাংলা কার ? নবান্ন কি মমতাময়ীই থাকবে? নাকি, লাল সূর্যের নতুন আলোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে গঙ্গা পাড়ের সেই শাসকবাড়ি? সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ মানে ইভিএম খুললেই। সকাল ৮ টার পর থেকেই একে একে স্পষ্ট হতে থাকবে, রাজনৈতিক আবহাওয়া দফতরগুলির পূর্বাভাস কতটা মিলছে আর কতটা মিলছে না। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত তড় সইছে না জনতার। কোলকাতা থেকে কোচবিহার, চাওয়ালা থেকে পোড় খাওয়া আমলা – সবার মনেই একটাই প্রতিধ্বনি, কী হয় ! কী হয় !
বুক ঢিপ ঢিপ প্রার্থীদেরও। জোট হোক বা জোড়া ফুল – রক্তচাপ বেড়ে গেছে সব শিবিরেই। সামগ্রিক ফলাফলের ওপর আম জনতার নজর তো থাকবেই, তবে বিশেষ নজর থাকবে বিশেষ কিছু কেন্দ্রের ওপর। বিশিষ্ট প্রার্থীদের জন্য বিশেষ হয়ে উঠেছে এমন কেন্দ্র গঙ্গার ওপারে যেমন রয়েছে, তেমন রয়েছে এপারেও। উত্তরের জানলায় চোখ রাখলে নজর পড়বে যে প্রার্থীদের ওপর, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন, কোচবিহার জেলার দিনহাটা কেন্দ্র থেকে দাঁড়ানো তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী উদয়ন গুহ। তিনি কিছুদিন আগেই ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তিনি জিতে দিদির মান রক্ষা করতে পারবেন, নাকি হেরে গিয়ে নিজের মুখ পোড়াবেন? লোকসভা ভোটে পরাজিত হওয়ার পর বিধানসভা ভোটেও শিলিগুড়ি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন বাইচুং ভুটিয়া। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আবার জোটের অন্যতম কারিগর সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য। ফলে এই কেন্দ্রের ওপর বাড়তি নজর রয়েছে সবার। অপরদিকে জলপাইগুড়ি জেলার ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির তৃণমূলের প্রার্থী গৌতম দেবের জয়-পরাজয় নিয়েও কৌতুহলের শেষ নেই সাধারণ মানুষের। উত্তরের এই তিন তারকা প্রার্থী ছাড়াও নজরে থাকবেন মালদার বিদায়ী দুই মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ন চৌধুরী ও সাবিত্রী মিত্র, বালুরঘাট কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী মন্ত্রী শংকর চক্রবর্তী সহ দার্জিলিঙের তিনটি বিধানসভা এলাকার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রার্থীদের দিকেও। উত্তর দিনাজপুর জেলার বিদায়ী মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরী, রাজ্যের পরিষদীয় সচিব তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি অমল আচার্য্য এবং রায়গঞ্জ কেন্দ্রের জোট প্রার্থী মোহিত সেনগুপ্তের ওপরেও নজর রয়েছে রাজনীতি আগ্রহী মানুষের।
৩৪ বছরের বাম শাসনের পতন ঘটে ছিল ২০১১ সালে। কিন্তু এই পতনের ইঙ্গিত মিলেছিল তার এক বছর আগেই, শিলিগুড়ি পৌরনিগমের ফলাফলের পরেই। বামেদের ক্ষমতা চ্যুত করে তৃণমূল কংগ্রেস দখল করেছিল শিলিগুড়ি পৌর নিগম। আবার পাঁচ বছরের মাথায় ২০১৫-তে শিলিগুড়ি কর্পোরেশন হাতছাড়া হয়ে যায় তৃণমূলের। বিজ্ঞজনেরা বলেন, ইতিহাসের চাকা নাকি ঘোরে। তাহলে ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের কোনও ইঙ্গিত কি লুকিয়ে আছে এক বছর আগের শিলিগুড়ি পুরনিগমের ফলাফলের অন্দরেই??