মানবিক রায়গঞ্জের অমানবিক রূপ,পড়ুন বিস্তারিত
Nblive রায়গঞ্জঃ শিক্ষা, সংস্কৃতি, মানবিকতার শহর রায়গঞ্জ। বহুকাল থেকেই রায়গঞ্জ নামটার সাথে জড়িয়ে আছে এইসব। সম্প্রতি ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যায় দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার নজির গড়েছে এই শহর রায়গঞ্জ। কিন্তু মানবিকতার পাশাপাশি এই শহরের অমানবিক রূপও যে এক অনন্য নজির গড়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
বিগত বেশ কয়েকবছর থেকেই এই অমানবিকতার চিত্র ধরা পড়তে শুরু করেছে রায়গঞ্জ সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায়। শহরের সুনাম দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকলেও খুন, জখমের শহর হিসেবেও সুখ্যাতি আছে রায়গঞ্জের। তবে নির্বাক প্রাণীদের উপর অত্যাচারের নিদর্শন হার মানিয়েছে সেই সব কলঙ্কিত ঘটনাকেও।
পশু প্রেমী সংগঠন উত্তর দিনাজপুর পিপল ফর অ্যানিম্যালস সংগঠনের দাবী, বিগত কয়েকবছরে জীবজন্তুর প্রতি নির্মম অত্যাচারের পরিমাণ এই শহরে বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সংগঠন সূত্রে খবর,
২০১৭ সালে রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জ এলাকায় একটি কুকুরকে পাউরুটির সাথে পেরেক মিশিয়ে খাইয়ে দেওয়া হয়। যার ফলে শরীরের ভেতরে ক্ষতবিক্ষত হয়ে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে কুকুরটি।
রায়গঞ্জের কসবা এলাকায় একটি ষাঁড়ের শরীরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে প্রায় মাস সাতেক আগে। সংগঠন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী ওই ষাঁড়টি ৯০ শতাংশের বেশি পুড়ে যায়। ছয় মাস ধরে চিকিৎসা চালানোর পরেও এখনও সুস্থ হয়ে ওঠেনি সে।
অপর দিকে সুভাষগঞ্জ এলাকায় একটি ষাঁড়ের উপর বিগত কয়েকদিন আগে অ্যাসিড হামলা করা হয়। এই ক্ষেত্রেও ষাঁড়টির শরীরের বৃহৎ অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
সাধারণ মানুষের হামলার হাত থেকে বাদ পড়েনি বন্য জন্তুরাও। ডালখোলা লাগোয়া বিহার এলাকায় একটি বিরল প্রজাতির প্যাঙ্গোলিনকে মেরে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখার ঘটনা ঘটে।
ইসলামপুরে মুরগি খেয়ে নেওয়ার অপরাধে প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয় একটি বেজির। এদিকে ইন্দো-বাংলা সীমান্ত গ্রাম রাধিকাপুরে গ্রামবাসীদের অতি উৎসাহী মনোভাবের জেরে প্রাণ খোয়াতে হয় একটি নীলগাইকে। অভিযোগ ওঠে নীলগাইটিকে পাকরাও করতে বাঁশ লাঠি দিয়ে আঘাতও করা হয় প্রাণীটিকে।
এমন একাধিক ঘটনার নজির রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের জেলা সম্পাদক গৌতম তান্তিয়া। তিনি বলেন, নির্বাক প্রাণীদের উপর মানুষের আক্রোশ ক্রমশই বেড়ে চলেছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে আহত প্রাণীদের চিকিৎসা করে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব হলেও অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসা করার সুযোগটুকুও মেলে না। এই অমানবিকতার তীব্র নিন্দা করেছেন গৌতম বাবু।