এবার পোস্টার সাঁটতে দেবশ্রীর বাড়িতে রায়গঞ্জের বিএমওএইচ, মন্ত্রী বললেন তামাসা চলছে
সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর বাড়িতে কোয়ারান্টাইন পোস্টার সাঁটতে গিয়ে ব্যর্থ হলেন স্বয়ং বিএমওএইচ ও রায়গঞ্জ থানার আইসি। গোটা ঘটনায় হেনস্থার অভিযোগ তুলে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করলেন মন্ত্রী।
Bengal Live রায়গঞ্জঃ মন্ত্রীর বাড়িতে কোয়ারান্টাইন নোটিশ সাঁটাকে কেন্দ্র করে ফের চাঞ্চল্য। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক, রায়গঞ্জ থানার আইসিকেও ফিরিয়ে দিলেন রায়গঞ্জের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যান দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। রায়গঞ্জের বিধায়ক ও রায়গঞ্জ পুরসভার পুরপতিকে মাতব্বর আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, তামাসা চলছে।
দিল্লি থেকে কলকাতা, এরপর রায়গঞ্জে আসেন সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী৷ এরপর শহরের রাস্তায় বেরিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক বিলি করেন তিনি। সেই থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত ও রায়গঞ্জ পুরসভার পুরপতি সন্দীপ বিশ্বাস লিখিত ভাবে অভিযোগ জানান জেলা পুলিশ ও প্রশাসনকে। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, লকডাউনের পর কী করে কলকাতা থেকে রায়গঞ্জে এলেন মন্ত্রী ? কোয়ারান্টাইনে না থেকে কেমন করেই বা রাস্তায় বেরিয়ে পড়লেন দেবশ্রী দেবী ?
এরপর শনিবার সকালে সরকারি নিয়ম মেনে কমলাবাড়ি পঞ্চায়েতের দুই স্বাস্থ্য কর্মী যান মন্ত্রীর সুদর্শনপুরের আবাসনে হোম কোয়ারান্টাইনের নোটিশ লাগাতে। অভিযোগ ওঠে, মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী সেই নোটিশ সাঁটতে দেননি স্বাস্থ্য কর্মীদের।
এরপর ফের শনিবার সন্ধ্যায় রায়গঞ্জের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ও রায়গঞ্জ থানার আইসি মন্ত্রীর বাড়িতে যান। নোটিশ লাগানোর কথা শোনামাত্রই তর্কে জড়িয়ে পরেন মন্ত্রী। সরকারি কোন নির্দেশবলে তাঁরা ওই পোস্টার সাঁটতে এসেছেন, সেই নির্দেশিকাপত্র দেখতে চান মন্ত্রী। কার প্ররোচনায় এইসব হচ্ছে তা কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার ও বিএমওএইচের কাছে জানতে চান তিনি। মন্ত্রী এও জিজ্ঞেস করেন, সেদিন তো অন্য সমস্ত সাংসদ ও মন্ত্রীরা দিল্লি থেকে বাড়ি ফিরেছেন। তাঁদের সকলের বাড়িতে এই নোটিশ লাগানো হয়েছে কি ? দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি চলার পর অবশ্য কোয়ারান্টাইন নোটিশ না লাগিয়েই ফিরে আসতে হয় সরকারি আধিকারিকদের।
এই বিষয়ে বিএমওএইচ সন্দীপ বাগ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে দেবশ্রী চৌধুরী বলেন, “গত দুইদিন থেকে উত্তর দিনাজপুর জেলায় তামাসা চলছে।” বিধায়ক ও পুরপতিকে মাতব্বর আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “ওঁদের হঠাৎ মনে হয়েছে দেবশ্রী চৌধুরীকে কোয়ারান্টাইনে পাঠাতে হবে। সেই শুনে পুলিশও নাচছে। দেশের অন্য মন্ত্রী ও সাংসদ যাঁরা দিল্লি থেকে নিজের এলাকায় ফিরেছেন তাঁদেরও বাড়িতে এই নোটিশ লাগানো হয়েছে কিনা আমি সেই রেফারেন্স দেখতে চেয়েছি। অর্ডারের কপিও দেখাতে বলেছি। ঘৃন্য রাজনীতির সীমা থাকা উচিৎ। যাঁরা আমাকে সাবধান করতে এসেছিলেন, তাঁরা নিজেরাই মাস্ক ছাড়া ছিলেন। সামান্য কয়েক ফুট জায়গার মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে কী করে তাঁরা আমাকে সাবধান হতে বলেন ?”
গোটা ঘটনায় তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী।