রাজ্য

জীবনের ‘মাধুকরী’ শেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বুদ্ধদেব গুহ

রবিবার রাতে ১১ টা ২৫ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন বুদ্ধদেব গুহ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।

 

Bengal Live বাংলা সাহিত্যের যুগাবসান, প্রয়াত সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ। করোনাকে জয় করে ঘরে ফিরলেও কোভিড পরবর্তী জটিলতা কেড়ে নিল প্রাণ। রবিবার রাতে ১১ টা ২৫ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় প্রবীণ সাহিত্যিকের। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। গত এপ্রিল করোনা আক্রান্ত হন তিনি, ৩৩ দিন ভর্তি ছিলেন হাসপাতালেও। এরপর বহু মৃত্যু গুজব তুচ্ছ করে করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু, তারপর থেকেই কোভিড পরবর্তী একাধিক সমস্যায় দেখা দিয়েছিল শরীরে।

৩৩ দিন হাসপাতালে থাকার পর করোনার বিরুদ্ধে লড়াইটা জিতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় অনুরাগীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আমি এখনই ফুরিয়ে যাব না।’ চলতি মাসেই শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার জেরে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এবারে শ্বাসকষ্ট ছাড়াও সংক্রমণ ছিল সাহিত্যিকের মূত্রনালীতে, ছিল লিভার এবং কিডনিতেও সামান্য সমস্যা ছিল। দৃষ্টিশক্তিও ক্ষীণ হয়ে এসেছিল বর্ষীয়ান কবির। এবারও তাঁর করোনা পরীক্ষাওl করা হয়, কিন্তু, রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। চারজন চিকিৎসকের একটি মেডিক্যাল টিম তাঁকে কড়া পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। রবিবার রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া বাংলা সাহিত্যমহলে।

আজও রায়গঞ্জের দাস বাড়িতে গ্রামোফোন চলে, রেকর্ড বাজে

কলকাতার বুকে ১৯৩৬ সালের ২৯ জুন জন্ম বুদ্ধদেব গুহর। তারপর পড়াশোনা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। পেশায় চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, পশ্চিমবঙ্গের আয়কর বিভাগের উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্যও ছিলেন তিনি। শুধু লেখক হিসেবে তাঁর পরিচিত নয়, তিনি কাজ করেছেন আকাশবাণী কলকাতার অডিশন বোর্ডের সদস্য হিসেবেও। তবে এই সবকিছুর ঊর্ধ্বে তাঁর জয়ী হয়েছিলো তাঁর লেখনী সত্তার। বুদ্ধদেব গুহর কলমে সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলা সাহিত্য জগত। তাঁর প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস ‘জঙ্গলমহল’।

‘মাধুকরী’ তাঁর অন্যতম সেরা সৃষ্টি। ‘ সকলের। এছাড়াও,’ বাবলি’, ‘কোজাগরী’, ‘হলুদ বসন্ত’, ‘একটু উষ্ণতার জন্য’, ‘কুমুদিনী’, ‘খেলা যখন’, ‘চানঘরে গান’ এর মতো উপন্যাসে বুদ্ধদেব জয় করে নিয়েছেন পাঠকের মন। ১৯৭৬ সালে ‘হলুদ বসন্ত’ উপন্যাসের জন্য তিনি আনন্দ পুরস্কার পান l। কিশোর সাহিত্যেও তিনি যারপরনাই মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। তাঁর সৃষ্টি ‘ঋজুদা’ কিংবা ‘ঋভু’র মতো চরিত্র এখনো কিশোরদের কাছে সমানভাবে জনপ্রিয়।

টাইপিং স্কুল থেকে চায়ের দোকান, বদলে গিয়েছে বংশী দার জীবন সংগ্রাম

জীবনের ‘মাধুকরী’ শেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বুদ্ধদেব গুহ। তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছে বাংলার সাহিত্যজগৎ। পাঠকের মননে তাঁর লেখাগুলিই তাঁকে করে রাখবে চিরস্মরণীয়।

Back to top button