সাসপেনশন প্রত্যাহার হল তৃণমূল শিক্ষক নেতা গৌরাঙ্গ চৌহানের
Bengal Live রায়গঞ্জঃ শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের শিক্ষক নেতার সাসপেনশন অর্ডার প্রত্যাহার করে নিলেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক)। রাজনৈতিক চাপে পড়েই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি গৌরাঙ্গ চৌহানকে সাসপেণ্ড করেছিলেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সুজিত মাইতি। অভিযোগ ছিল, দুই শিক্ষককে বাড়ির কাছে বদলি করা নিয়ে বলতে গিয়ে ডিআইকে রীতিমতো হুমকি দিয়েছেন ও দুর্ব্যবহার করেছেন গৌরাঙ্গ।
ঘটনার পর তাঁকে শোকজ করেন ডিআই। কিন্তু শোকজের জবাবে সন্তুষ্ট হতে না পেরে এবং গৌরাঙ্গবাবু তাঁর সাংগঠনিক পদের পরিচয় দিয়ে সংগঠনের প্যাডেই শোকজের জবাব দেওয়ায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর তাঁকে সাসপেণ্ড করেন সুজিতবাবু। এর পরেই ওই সাসপেনশন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়া শুরু করে শাসক দল। তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল রীতিমতো শিক্ষা মন্ত্রীকে চিঠি লিখে গৌরাঙ্গ চৌহানের সাসপেনশন প্রত্যাহারের ব্যাপারে অনুরোধ জানান। শুধু তা-ই নয়, উলটে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককেই কাঠগড়ায় তুলে তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল শিক্ষা মন্ত্রীর কাছে নালিশ জানান, ডিআই তাঁদের অনেক ন্যায্য দাবিগুলোর প্রতি মোটেই কর্ণপাত করছেন না বলে। অন্যদিকে, গৌরাঙ্গ চৌহানকে দক্ষ সংগঠক বলে সার্টিফিকেট দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রীর কাছে তাঁর সাসপেনশন প্রত্যাহারের সুপারিশ জানান দলের জেলা সভাপতি।
এর পর প্রত্যাশিত ভাবেই সোমবার সাসপেনশন অর্ডার প্রত্যাহার করে নেন ডিআই তথা ডিপিএসসি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, দুই প্রাথমিক শিক্ষককে শহরের দুটি স্কুলে বদলি করার দাবী নিয়ে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে গিয়েছিলেন গৌরাঙ্গ চৌহান।
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক-এর জারি করা শোকজ লেটারে গৌরাঙ্গ চৌহানের বিরুদ্ধে সরাসরি হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। অভিযোগ, ডিআইয়ের বিনা অনুমতিতে তাঁর কার্যালয় কক্ষে প্রবেশ করেন গৌরাঙ্গবাবু। এর পর ওই দুই শিক্ষককে বদলি না করা হলে এই দুটি বদলি ছাড়া সমস্ত বদলি টাকার বিনিময়ে করা হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমের কাছে অভিযোগ তোলা হবে বলে গৌরাঙ্গ চৌহান জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শককে হুমকি দেন বলে শোকজ লেটারে উল্লেখ করেছিলেন ডিআই (প্রাথমিক)।
শোকজ লেটারে আরও উল্লেখ করা হয়, দপ্তরের বাইরেও বিদ্যালয় পরিদর্শককে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি ও দুর্ব্যবহার করেছেন গৌরাঙ্গ চৌহান। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক-এর বিরুদ্ধে আদালতে কেস করার হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে ওই শিক্ষক নেতার বিরুদ্ধে। এরপরেই শৃঙ্খলাভঙ্গ, সরকারি কাজে বাধা, সরকারি আধিকারিককে হুমকি ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ কেন দায়ের করা হবে না, তা জানতে চেয়ে শোকজ করা হয় ওই শিক্ষক নেতাকে।
