রায়গঞ্জ কুলিক পাখিরালয় এখন দেশীয় পাখিদের দখলে

পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনার মাঝেই বনের নানান গাছে বাসা বেঁধেছে টিয়া, কাকাতুয়া, প্যারাডাইস ফ্লাইক্যাচার, বেনেবউরা।

Bengal Live রায়গঞ্জঃ পর্যটক শূন্য নিস্তব্ধ কুলিক পক্ষীনিবাসে দেশীয় পাখিদের কোলাহল। পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনার মাঝেই বনের নানান গাছে বাসা বেঁধেছে টিয়া, কাকাতুয়া, প্যারাডাইস ফ্লাইক্যাচার, বেনেবউরা। পক্ষীনিবাসের ভেতরের জলাশয়ে অবাধ বিচরণ ব্রোঞ্জ উইং জাকানা, জলময়ুর, পানকৌড়িদের। পর্যটকদের অনুপস্থিতির সুযোগে বেজায় খুশি বাংলার দেশীয় পাখিরা। পরিবেশ প্রেমীরা বলছেন, লকডাউনের জেরে বায়ু ও শব্দ দূষণের মাত্রা কমেছে। জঙ্গলের দরজা সাধারণের জন্য বন্ধ থাকায় কোলাহল মুক্ত হয়েছে অনেকটা। ফলে দেশীয় পাখিদের এখন আনন্দের দিন।

শাহ বুলবুলি (পুরুষ) ছবি- ক্ষীরোদ সরকার

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করার আগেই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাস। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে অবস্থিত রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাসে প্রতি বছর নিয়ম করে পরিযায়ী এশিয়ান ওপেন বিল স্টর্ক প্রজাতির পাখিদের আনাগোনা। সংখ্যাতত্বের বিচারে এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম পক্ষীনিবাসের স্বীকৃতি পেয়েছে এই বনাঞ্চল। সেই পক্ষীনিবাসেই এখন মুক্ত বিহঙ্গদের মেলা।

নীলকন্ঠ বসন্তবৌরি। ছবি ক্ষীরোদ সরকার

রায়গঞ্জের তরুন বার্ড ফটোগ্রাফার ক্ষীরোদ সরকারের মতে, প্রায় তিন মাসের লকডাউনের কারণে শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ যেমন আয়ত্বের মধ্যে৷ তেমনই মানুষের আনাগোনা কমেছে। ফলে চড়ুই,কোকিল সহ ধানি তুলিকা,জলময়ূর, কমলা দামা, শাহ বুলবুলি, বাজপাখি, নীলপুচ্ছ বাঁশপাতিদের মতন দেশী পাখিদের এই পাখিরালয় ও পক্ষীনিবাস লাগোয়া জঙ্গলে দেখা মিলছে। জঙ্গল লাগোয়া কুলিক নদীতেও দূষণের মাত্রা কমে যাওয়ায় বিভিন্ন ধরনের মাছের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। যার কারণে পাখিদের খাদ্যের অভাব মিটেছে। ফলে রায়গঞ্জ কুলিক পাখিরালয় এখন দেশীয় পাখিদের দখলে।

জলময়ূর। ছবি – ক্ষীরোদ সরকার

শহরের পক্ষীপ্রেমীদের মতে, লকডাউনের কারণে পরিবেশের অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে। আগে দেশীয় পাখির তেমন দেখা না মিললেও লকডাউনের পর থেকে দেশী পাখির প্রচুর সংখ্যায় দেখা মিলছে। এই লকডাউন পুরোপুরি উঠে গেলে আবার পাখিদের একই সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। পরিবেশের ভারসাম্য যেন মানুষের দ্বারা নষ্ট না হয় সেদিকে নিজেদেরই নজর দিতে হবে বলে মত প্রকাশ করছেন পরিবেশ প্রেমীরা।

Exit mobile version