
NBlive রায়গঞ্জঃ তৃণমূল সাংসদের বিরোধীতায় বিশবাঁও জলে রাধিকাপুর কলকাতা তেভাগা লিঙ্ক এক্সপ্রেস। বৃহস্পতিবার এমন অভিযোগেই সরব হলো উত্তর দিনাজপুর জেলা সিপিআইএম। সিপিআইএমের অভিযোগ, বুধবার কাটিহারে রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সাথে সাংসদদের বৈঠকে রাধিকাপুর-কলকাতা তেভাগা লিঙ্ক এক্সপ্রেস ট্রেনের দাবী তুলতেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তৃণমূল সাংসদ অর্পিতা ঘোষ এর বিরোধীতা করেন। সিপিএমের অভিযোগ, সাংসদ মহম্মদ সেলিমের প্রতিনিধি এই বিষয়ে কথা বলা শুরু করলেই আচমকা অর্পিতা দেবী বলেন, একলাখিতে ট্রেনের সংযুক্তিকরণ ও বিচ্ছিন্ন ঘটানো হলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকবে। লিঙ্ক এক্সপ্রেসের বদলে নতুন ট্রেনের দাবী করুন। সিপিআইএম নেতৃত্বের দাবী, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সাংসদের এমন মন্তব্যের জেরে এই ট্রেনের গুরুত্ব রেল কর্তৃপক্ষকে বোঝানোর আগেই বৈঠকের বিরতি ঘোষণা করে দেওয়া হয়। মধ্যাহ্নভোজনের পর আবার বৈঠক শুরু হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। সিপিআইএমের হুঁশিয়ারি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই ট্রেনের ঘোষণা না হলে ডালখোলায় রেল অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করবে তাঁরা।
কলকাতার সাথে রায়গঞ্জ মহকুমা এলাকার রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে দীর্ঘদিন থেকেই রাধিকাপুর-কলকাতা দিনের ট্রেনের দাবীতে সরব হয়েছিল সিপিআইএম সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি। বিগত ২৫ আগস্ট এই নিয়ে রায়গঞ্জে রেল রোকো আন্দোলনও করে সিপিআইএম। প্রায় ছয়ঘন্টা রেল রোকো আন্দোলন করার পর রেল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তা তুলে নেওয়া হয়।
সিপিআইএমের দাবী, রাধিকাপুর-কলকাতা তেভাগা লিঙ্ক এক্সপ্রেস চালু করার বিষয়ে রায়গঞ্জের সাংসদ মহম্মদ সেলিম একাধিকবার রেলমন্ত্রী ও এন এফ রেলের জেনারেল ম্যানেজারের সাথে বৈঠক করেছেন। রেলমন্ত্রীর তরফে এই ট্রেন চালুর বিষয়ে সবুজ সংকেতও মিলেছে। ইস্টার্ন রেল এই ট্রেন চালাতে রাজি হয়। এবং এন এফ রেল লিঙ্কএক্সপ্রেসের জন্য বাড়তি কোচ ও একলাখি স্টেশনে বগি সংযুক্তকরণ ও বিচ্ছিন্ন করতেও রাজি হয়। কিন্তু এরপরেও নানান রকম টালবাহানা করে এই ট্রেন চালু করতে ঢিলেমি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
২৫ আগস্টের রেলরোকো আন্দোলনের দিন কাটিহার রেল ডিভিশনের পক্ষ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে এই রেল চলাচলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই বৈঠক কার্যত ভেস্তে গেল তৃণমূল সাংসদের জন্য বলে অভিযোগ করেন সাংসদ মহম্মদ সেলিমের সচিব রাতুল সাহা। তিনি বলেন, সাংসদের প্রতিনিধি হয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর কাটিহারে রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সাথে বৈঠক হয়। সেখানে এন এফ রেলের অধীন আট জেলার সাংসদ ও তাঁদের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। সেখানে মহম্মদ সেলিমের প্রতিনিধি হয়ে হাজির ছিলাম। রাতুল বাবুর অভিযোগ, বৈঠকে রাধিকাপুর-কলকাতা তেভাগা লিঙ্ক এক্সপ্রেসের দাবী নিয়ে কথা বলতে শুরু করলেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তৃণমূল সাংসদ বলেন, একলাখিতে ট্রেনের সংযুক্তকরণ ও বিচ্ছিন্ন ঘটলে দুর্ঘটনার সুযোগ থাকবে। আপনারা নতুন ট্রেনের দাবী করুন।
রাতুল বাবু বলেন, তৃণমূল সাংসদের এমন মন্তব্যের পরেই মধ্যাহ্নভোজনের জন্য বৈঠকে বিরতি দেওয়া হয়। আমাদের বলার সুযোগ নষ্ট করে দেওয়া হয়। পরে সাংসদ এন এফ রেলের জেনারেল ম্যানেজারের সাথে টেলিফোন মারফৎ কথা বললে মধ্যাহ্নভোজনের পর বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বলার সুযোগ পেলেও রেল কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও সদুত্তর মেলেনি। তিনি বলেন, রাজনীতি করতে গিয়ে লিঙ্ক এক্সপ্রেসের বিরোধীতা করে আসলে নিজের কেন্দ্রের ভোটারদের সাথেই বঞ্চনা করছেন অর্পিতা দেবী। কারণ তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে এই জেলার ইটাহারও রয়েছে। ফলে এই ট্রেন চালু হলে ইটাহারের মানুষও সুবিধা ভোগ করবে। রাতুল বাবু বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই ট্রেন চালু করার কথা ঘোষণা না করা হলে ডালখোলায় রেল অবরোধ করবে দল।
এই বিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সাংসদ অর্পিতা ঘোষের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেন নি।