ঝরণার জলে তেষ্টা মেটাবে টোটোরা

ওয়েব ডেস্কঃ দেশের ক্ষুদ্রতম জনগোষ্ঠী হল টোটো সম্প্রদায়। এই সম্প্রদায়ের অন্যান্য নানান সমস্যা গুলির মধ্যে অন্যতম হল পানীয় জলের সমস্যা। স্বাধীনতার পর থেকে দেশজুড়ে উন্নয়ন হলেও এই টোটো পাড়ায় উন্নয়ন শব্দটা তাৎপর্যহীন ছিল কয়েকদিন আগে পর্যন্ত। পানীয় জল বলতে নদীর জল বা ঝোড়ার জলই ছিল তাঁদের একমাত্র ভরসা। ফলে প্রায়শই নানান রোগ ব্যাধি লেগেই থাকত টোটো পাড়ার মানুষদের। এবার উন্নয়নের আলো পৌঁছচ্ছে খোঁজ টোটো পাড়ার সাধারণ মানুষদের কাছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর “জল-ধরো জল-ভরো” প্রকল্পে এবার পানীয় জলের স্বাদ পেতে চলেছে টোটোপাড়ার সুব্বাগাঁও, মন্ডলগাঁও ও পঞ্চায়েতগাঁও এলাকার মানুষেরা। উল্লেখ্য, ভূটানের পাদদেশে অবস্থিত এই টোটোপাড়ার মাটির প্রকৃতি পাথুরে। ফলে ভূগর্ভস্থ পানীয় জল পাওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল। আর এই কারনে এত দিন ধরে পরিশ্রুত পানীয় জল থেকে বঞ্চিত ছিলেন গ্রামের মানুষেরা। কিন্তু এবার সমস্যার সমাধান হতে চলছে। ঝরণার জলকে কাজে লাগিয়ে পরিশ্রুত পানীয় জল পৌছে দেওয়া হবে ঘরে ঘরে।
ভূটানের পাহাড়ের বাঁক বেয়ে আসা নিতিংতি নদীর ঝরণার জলকে রিজার্ভারে জমিয়ে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে পরিশ্রুত করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পৌছে যাবে এই জল। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান আশা বোমজান বলেন, “টোটোপাড়ার অন্তর্গত মঙ্গর লাইন এলাকায় এই কাজ চলছে। কাজ অনেকটাই এগিয়ে এসেছে। শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। এতে এলাকার তিনটি গ্রামের প্রায় ১২০ জন মানুষ উপকৃত হবেন”।
স্থানীয় বাসিন্দা অশোক টোটো জানান, “এত দিন পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে সরাসরি ঝোড়ার জল ব্যবহার করা হত। এতে শারীরিক সমস্যাও হত। গ্রামের মানুষেরা প্রায়ই পেটের নানান সমস্যায় ভুগতেন । পাশাপাশি চর্ম-জনিত রোগেও মাঝে মধ্যেই ভুগতে হত তাঁদের। এই প্রকল্প বাস্তব রূপ নিলে আমাদের সমস্যার সমাধান হবে”।
আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক সমীরণ মন্ডল জানান, “আনুমানিক ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে একশ দিনের কাজের প্রকল্পের আওতায় ঝরনার জলকে কাজে লাগিয়ে পানীয় জলের সমস্যা মেটানোর এক অভিনব প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এই কাজ পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। কাজ দ্রুত এগোচ্ছে। দ্রুত মানুষ এর সুফল পাবে”।