পোর্টজিন

“বর্ষবরণের রাত” – অর্নেশ ভট্টাচার্য্য

Bengal Live পোর্টজিনঃ পোর্টজিন কি? পোর্টজিন একটি অনলাইন ম্যাগাজিন। প্রতি সপ্তাহের রবিবার এটি বেঙ্গল লাইভের (bengallive.in) এর পোর্টজিন বিভাগ থেকে প্রকাশিত হয়।

bengal live portzine bangla golpo

 

দশম শ্রেণির ছাত্রী নীরা, পড়াশোনাতে মেধাবী ৷ তবু নীচু জাত বলে পাড়ার লোকেরা তাকে খাটো করতে কুন্ঠা করে না ৷ তবে এবারে নীরার নম্বর খুব একটা আশানুরূপ হয়নি তাই সে মনের দুঃখে একান্তে পাদপের সামনে দাঁড়িয়ে ক্রন্দন করছিল, সেটা অবলোকন করে নীরার মিস শ্যামলী দেবী তাকে বলেন নীরা কান্নাকাটি করছিস যে বরং ৷ নীরা উত্তর দিলো ম্যাম, এবারে আমার অঙ্কে নম্বর ভালো ওঠেনি, একশোতে ৭৫ পেয়েছি ৷ ম্যাম শুনে বলেন কান্নাকাটি করিস না তুই তো প্রতিবার ভালো নম্বর পাস পরের বার দেখবি ভালো পাবি ৷ নীরা বলল ম্যাম আপনি আমাকে অঙ্কটা শেখাবেন ৷ ম্যাম বলল আচ্ছা নীরা, আমি কিছু প্রতিবন্ধী মেয়েকে পড়াই তুইও তাদের পরে আয় না, আমি তোকে আলাদা করে পড়াব এতে তোর কোনো বেতন লাগবে না ৷ নীরা বলল তাহলে তো ম্যাম খুবই ভালো হয় ৷ নীরা যথারীতি আনন্দে বাড়ি ফিরলো ৷ বাড়ি ফিরে সবসময়ই সে আগে পড়তে বসে ৷ মা তখন বলে নীরা কে বলে তোর বাবাকে বলেছি তোর যেন সত্ত্বর একটা বিয়ের ব্যবস্থা করে ৷ বিয়ের কথা শুনলেই নীরার রাগ চড়ে যায় মা কে সে মুখের উপর বলে দেখো মা ওসব বিয়ে-টিয়ে আমার দ্বারা এখন হবে না, আর আমি চলে গেলে তোমাদের দেখবে কে? আমি পড়াশোনা করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে তোমাদের দায়িত্ব নিতে চাই ৷ নীরার মা বলে সে হবে ক্ষণ আগে খেয়ে নে সাঁঝ নেমে এলো ৷ নীরা উত্তর দিল না মা তোমরা খেয়ে নাও আমি আর কিছুক্ষণ পড়া করব ৷ নীরার বাবা তখন সদ্য বাজার থেকে বাড়ি ফিরেছে ৷ বাবা ফিরতেই নীরা বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে জানা তো বাবা আমি এবার থেকে পড়তে যাব, আমাদের স্কুলের শ্যামলী ম্যাম বলেছে আমাকে অঙ্ক শেখাবে যেহেতু এবারে আমার অঙ্কে ভালো নম্বর ওঠেনি তাই ৷ নীরার বাবা তখন বলে না না আমি তোর অত খরচ জোগাতে পারব না ৷ নীরা বলে আরে না বাবা ম্যাম বলেছে আমার পড়তে কোনো বার্তি টাকা পয়সা লাগবে না, আর পাঁচজন মেয়ে যেমন পড়া করে আমিও তেমনি করব ৷ নীরা নীচু জাতের মেয়ে বলে অনেকে তার এই পড়াশোনাকে ভালো চোখে দেখছিলও না ৷ প্রায় রোজদিনই নীরা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে গেলে গুমটির পানখেকো জেঠুগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করত আর বলাবলি করত আমাদের সমাজে মেয়েদের অত লেখাপড়া করলে চলে? কোথায় বিয়ে করে ঘর সংসার করবে তা না, দিব্যি স্কুলে গিয়ে আমাদের সমাজে আমাদেরই মাথা হেঁট করে চলেছে ৷ তবুও নীরা তাদের কথায় কর্ণপাত না করে নিজ লক্ষ্যে অবিচল থাকার চেষ্টা করে, নিয়মিত স্কুলে যায় ৷ ওই একপাড়াতেই থাকত দুটি ছেলে তারা একদিন নীরার পথ আটকে ধরে ৷ নীরা কনভয়ে তাদের বলে পথ ছাড়, আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে ৷ ছেলেদুটো নীরাকে বলে আরে সবুর কর নীরা, দুদন্ড কথা তো বলি তোর সাথে ৷ নীরা বলে তোদের সঙ্গে কথা বলার আমার সময় নেই, আমার স্কুল যেতে দেরি হয়ে যাচ্ছে, এই বলে নীরা ওদের পাত্তা না দিয়ে তাদের পথ থেকে সরিয়ে দেয় এবং আবার স্কুল অভিমুখে রওনা দেয় ৷ তিনআঙুলের মেয়ে নীরার এই অপমান তাদের বুকে দ্বীপ সৃষ্টি করে তারা হিংসায় জ্বলতে থাকে ৷ পড়াশোনা করছে বলে নীরা তোর খুব দেমাক হয়েছে না, দ্বারা তুই যত উপরে উঠবি তোর ডানা আমরা তত ছেঁটে ফেলার চেষ্টা করব, এই বলে তারা ক্রোধে ফুঁসতে থাকে ৷ একদিন নীরা তার স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে আচমকা তার সাইকেলের চেনটা কেটে যায় এবং নীরা সাইকেল থেকে পড়ে যায় ৷ নীরা ধূলি ঝেড়ে উঠে দেখে তার সাইকেলের চেনটা পড়ে গেছে ৷ নীরা তখন আশেপাশে তাকিয়ে দেখে চেন সারানোর দোকান ৷ অনন্যোপায় নীরা তখন নিজের মনেই বলে নাহ্; চেনটা তাকেই লাগাতে হবে, নীরা চেষ্টা করে কিন্তু কিছুতেই হয় না, চেন ব্যাটা কিছুতেই আঁটোসাঁটো হতে চায়না, সেই ঢিলেই থাকে ৷ নীরার পাশ দিয়ে তখন একটি ছেলে চলে যাচ্ছিল ৷ সে দেখল একটি মেয়ে তার সাইকেলের চেন লাগাতে পারছে না ৷ কিছুদূর যেতেই ছেলেটার মনে হল না; মেয়েটার সাহায্য করা একবার দরকার ৷ এই বলে সে আবার ফিরে এলো নীরার কাছে ৷ ছেলেটা নীরাকে শুধাল কি হয়েছে তার? সাইকেলের চেন লাগাতে পারছে না? নীরা বলল হ্যাঁ অনেকক্ষণ ধরে চেষ্টা করে সে যাচ্ছে কিন্তু কিছুতেই হচ্ছে না এদিকে বিকেল পাঁচটা বাজতে চলেছে, বাড়ি যেতেও তার দেরি হয়ে যাচ্ছে, কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না ৷ সহৃদয় ছেলেটা বলল তাকে একবার চেষ্টা করতে দিতে যদি বা সে পারে ৷ নীরা বলল ঠিক আছে ৷ ছেলেটা কি ইতিউতি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে স্বচ্ছন্দে চেনটা লাগিয়ে ফেললো সাইকেলে ৷ এই নাও তোমার চেন লাগানো হয়ে গেছে ছেলেটা নীরা কে বলল ৷ নীরা বেজায় খুশি; নীরা ছেলেটাকে বলল বাহ্ দারুণ আপনার কারুশৈলী তো ৷ ছেলেটা উত্তর দিলো না না এ আর এমন কি কাজ! ছোটবেলায় বাবার সাইকেলে যখন চেন কেটে যেত তখন সেই বাবার হয়ে চেন লাগিয়ে দিত সেই থেকেই চেন লাগানো অভ্যেসে হয়ে গেছে ৷ নীরা অভিবাদন সুরে বলে উঠল আপনি আমার খুব উপকার করলেন, আজ তবে সে আসুক পরে আবার অবশ্যই তাদের দেখা হবে ৷ ছেলেটা বলল হ্যাঁ যাও, তার মা হয়ত তার জন্য চিন্তায় পাড়া মাথায় করেছে ৷ এই বলে দুজন দুজনা যে যার গন্তব্যে চলমান হল ৷ বাড়ি আসতেই মায়ের ফিরতি বকুনি আর জিজ্ঞাস্য : কোথায় ছিলি? এত কেন ফিরতে দেরি? নীরা বলল বলছি বলছি আগে একটু জল খাই জিরোই দিয়ে সব বলছি ৷ নীরার মা বলল জানিস তোর বাবা তোকে খুঁজতে বেরিয়েছে ৷ নীরা বলল এই রে কেন? আমি তো বলেছিলাম একটু দেরি হলে বাবা যেন আমাকে খুঁজতে না বেরোয় তারপরও….৷ মা বললে তা বললে হয় রে, আর তোরই বা এত কিসের পড়াশোনা বুঝি না ৷ নীরা বলল ওসব ছাড়ো আগে বাবাকে ডেকে নিয়ে এসো ৷ নীরার মা বলল হ্যাঁ তুই বোস আমি ডেকে নিয়ে আসছি ৷ এদিকে বাবা ফিরতেই একরাশ বক্রোক্তি; সবাই যেটা বলছে সেটা শোন না মা, আমরা সমাজের নীচু স্তরের মানুষ, অনেক গণ্যমান্য লোক আছে যাদের বচনও আমাকে আমাদের শুনতে হয় ৷ নীরার সাফ উক্তি নীচু জাত আবার কি? বাবা আমরা মানুষ ওরাও মানুষ তাহলে এত বিভেদ কিসের? ওরা পড়াশোনা করতে পারবে আর আমাদের পড়াশোনা করার বেলায় দোষ!!! কেন বাবা; তাহলে কে বেশি বুদ্ধিমান ওরা না আমরা?? তখন নীরার মা বলে আমাদের সমাজে মেয়েরা এত পড়াশোনা করে না, আর তাছাড়া তোর বাবাকে বলছি একটা ভালো সম্বন্ধ পেলে তোকে পাত্রস্থ করার কথা ৷ না মা সেটা সম্ভব নয়, আগে পড়াশোনা তারপর অন্যকথা ৷ সমাজ দংশন নীরার জেদকে আরো বাড়িয়ে তোলে, নীরা আরো পড়াশোনায় একাগ্র হয় ৷ এদিকে পরদিন সকালে নীরা আবার রওনা স্কুলে, স্কুল যাওয়ার পথে নীরা দেখে তার পাড়ার কিছু বাচ্চা ছেলেমেয়ে পেন নিয়ে খাতায় আঁকুবুঁকি কাটছে ৷ নীরা তখন বাহন থামিয়ে ভাবে ম্যাডাম তো আমাদের মতন এমন কত ছেলেমেয়েকে বিনামূল্যে পড়ান, আমি যদি এই বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলোকে বিনামূল্যে পড়াতে পারি তাহলে আমারও ভালো লাগবে আর আমার পড়াশোনাও ঝালানো হবে, এই ভেবে সে মনে মনে ঠিক করলো পরের মাস থেকে ওদের পড়ানোর চেষ্টা করবে ৷ এবার ম্যাডামের কাছে গিয়ে সে বলে ম্যাম আজ যখন আপনার কাছে পড়তে আসছিলাম তখন আমাদের পাড়ার কিছু বাচ্ছা ছেলেময়ে দেখলাম স্লেট চকে আঁকুবুঁকি কাটছে আমি ভাবছি ওদের বিনামূল্যে পড়াব তাতে আমার পড়াও হবে ভালোও লাগবে ৷ শ্যামলী ম্যাম নীরাকে বলেন এতো খুব ভালো কথা নীরা, তা কবে থেকে পড়াবি ভাবছিস ওদের? নীরা বলে এই তো ম্যাম পরের মাস থেকে, আসলে এ সপ্তাহে বাড়িতে একটু কাজ আছে তাই… বাহ্ খুব ভালো কথা কর, আমার এতে ১০০ শতাংশ সহমত আছে, তবে দেখিস ওদের পড়াতে গিয়ে নিজের পড়াশোনার যেন ক্ষতি করিস না ৷ না ম্যাডাম আমি দুটোই যাতে ভালো মত হয় তাই চেষ্টা করব; এবার দেখা যাক ৷ নে এবার অঙ্কের খাতাটা বের কর ৷ আজ তোকে নতুন একটা উপপাদ্য শেখাব ৷ নীরা খুব আগ্রহে বলল কি ম্যাম? ম্যাডাম বললেন জ্যামিতির নাম হচ্ছে ‘ত্রিভুজের মধ্যমাত্রয় সমবিন্দু’, আর নীরা গতকাল যে টাস্ক তোকে দিয়েছিলাম সেটা করেছিস তো? হ্যাঁ ম্যাম নীরা উত্তর দিলো ৷ মিস বললেন কই দেখা, ঠিক হয়েছে কিনা একবার দেখি ৷ নীরা বলল এই যে ম্যাম ৷ শ্যামলী মিস খুব ভালো করে নীরাকে ভরকেন্দ্র সমান্তরাল রেখা ছেদক বোঝালেন, আর কোন কোন জায়গায় ত্রুটি হয়েছে সেগুলোও ধরালেন ৷ নীরা তখন অশ্রুসজল চোখে মিসকে বলে উঠল মিস “একদিন না বুঝেই মুখস্ত করে ফেলেছিলাম উপপাদ্য কয়েকটা নাম্বারের জন্য, এতদিন পর যখন বোঝার স্বভাবটা আয়ত্তে, মুখস্থের অভ্যেসটা যেন মুখ লুকিয়েছে জ্যামিতিক সমীকরণের অপরিচিত গভীরতায় ৷ হ্যাঁ “ত্রিভুজের মধ্যমাত্রয় সমবিন্দু ৷” দুজনের জ্যামিতিক সংজ্ঞা প্রায় অনেকক্ষণ চলল ৷ দেখতে দেখতে ঘড়িতে ছটা প্রহর গুনলো ৷ একসময় মিসকে আসি বলে নীরা সেদিনের মত যাত্রা করল বাড়ির পথে ৷ এদিকে বাপমায়ের চিন্তার অবকাশ নেই, মেয়েটা এখনো কেন এল না? দেখতে দেখতেই মেয়ের আগমন চটুল পায়ে মৃদুল দৃষ্টিতে ৷ বাপ বলে উঠলে তোর বাড়ি ফেরার সময় হল? নীরা বলল না বাবা মিস দারুণ একটা উপপাদ্য শেখাচ্ছিল তাই দেরি হয়ে গেল ৷ ও মা দশ টাকা দাও না জল ফুচকা খেয়ে আসি, খিদে পেয়েছে ৷ মা বলল ছাইপাশ গেলে রাতে পেটে লাইগবে ৷ নীরাও নাছোড়বান্দা যতক্ষণ না মা ফুচকার টাকা দিচ্ছে নড়বে না, ফুচকা তার চাই চাই ৷ নীরার বাবা বলল আরে মেয়েটা যখন ফুচকা খেতে চাইছে ওকে টাকা দাওনা আর তাছাড়া ও তো আর রোজ খেতে চাইছে না ৷ নীরার জেদের কাছে নীরার মা বলল ঠিক আছে তুমি যখন বলছ ৷ এদিকে মায়ের হাত থেকে দশ টাকা নিয়ে নীরা খুব আনন্দে জল ফুচকা খেতে বেড়িয়ে পড়ল ৷ দোকানে গিয়ে ফুচকা খেতেই পাশের ছেলেটা বলে উঠল আরে তুমি!! এত সাঁঝে,, নীরা বলল তুমি এখানে এখন? আরে আমার তো সম্পর্কে মামার দোকান তাই ভাবলাম মামার কাছে একটু জল ফুচকা খাওয়া যাক ৷ নীরা বলল ও আচ্ছা আচ্ছা ৷ বলছি আপনার নামটাই তো জানা হচ্ছে না…. ছেলেটি বলল আমার নাম সুনীল; সুনীল পোদ্দার ৷ আর তোমার নাম? সুনীল বলল ৷ মেয়েটি বলল তার নাম নীরা; নীরা বাগদি ৷ নীরা বলল ও ফুচকা খাওয়া হয়ে গেছে তাহলে চলুন আমরা হাঁটা দিই ৷ সুনীল বলল তুমি একা যেতে পারবে? নাহলে চলো আমি তোমাকে একটু এগিয়ে দিই, দেখো আবার ঠান্ডা বাতাস লাগিয়ে শরীর না যেন খারাপ হয় তাহলে তোমার পড়াশোনার ক্ষতি হবে ৷ নীরা তৎক্ষণাৎ বলে উঠল আমার কথা এত ভাবছেন, নিজের কথা ভাবুন শুধু একটা ফুলহাতা জামা পড়েই চলে এসেছেন, নিন ধরুন আমার মাফলারটা জড়ান ৷ সুনীল বলল তার আর দরকার নেই, আমার অভ্যেস আছে৷ বাড়ি পথে সেই দুটো ছেলে নীরা আর সুনীল কে প্রত্যক্ষ করছিল, দুজনা পরস্পরে বলাবলি করল দেখছিস কেমন ডুবে ডুবে জল খাচ্ছে, আর আমাদের পাত্তাই দেয় না, দ্বিতীয় ছেলেটি বলল ওর ব্যবস্থা এবার হবে, শুধু দেখে যা ৷ পথের শেষে সুনীল বলল আচ্ছা নীরা, ওই ছেলেদুটো কারা যারা তোমার আশেপাশে সবসময় ছায়ার মত লেপ্টে থাকে ৷ নীরা বলল ওরা আমার পাড়ার ছেলে, অভব্য, হায়া নেই, ছাড়ো ওদের নিয়ে কথা বলা অলাভ ৷ ছেলেদুটো সব শুনলো আড়ি পেতে কিরকম অপমান করল আমাদের দেখলি সামনে পিছন থেকে, সামান্য অ আ ক খ শিখেছে বলে এত আস্ফালন, ওর হচ্ছে; কি হচ্ছে রে? ধ্বংস!!! সুনীল নীরাকে বলে কাল একবার আসতে পারবে? নীরা সাগ্রহে জিজ্ঞেস করে কোথায় এবং কেন? সুনীল প্রত্যুত্তরে বলে আমি একটা কবিতা লিখেছি, নীরা বলে তুমি কবিতা লেখো… সুনীল বলে হ্যাঁ ৷ কি কবিতা গো? কই শোনাও তো ৷ সুনীল বলে আরে সেইজন্যই তো বলছি তোমাকে কাল একবার আসতে, কাল এলে পরে তোমাকে শোনাব ৷ নীরা বলে হ্যাঁ অবশ্যই আমি চেষ্টা করব ৷ সুনীল আর নীরার দুকথা এক হয়ে যায় কোথায় দেখা করবে বলো বলার মাধ্যমে ৷ সুনীল বলে গাঁয়ের প্রান্তে যে শালুক বন আছে ওইখানে ৷ নীরা বলে আমার খুব পছন্দের জায়গা ওটা ৷ সুনীল বলে তাহলে হয়েই গেল, কাল তাহলে দুজনের দেখা হচ্ছে৷ নীরা বলে কখন সেটা তো… ৷ সুনীল বলে ওই অপরাহ্নে ৷ নীরা বলে ঠিক আছে, তাছাড়া কাল বর্ষবরণ রাত, বেশ মজাও হবে ৷ এদিকে ছেলেদুটো ওদের কথা চুপিসারে শোনে এবং শয়তানী ফন্দি আঁটে কিভাবে তাদের শত্রু নাশ করা যায় ৷ পরদিন কথা মত মা বাবাকে ম্যাডামের কাছে পড়া আছে বলে বুঝিয়ে নীরা সুনীলের কথা মত অপরাহ্নে বেড়িয়ে পড়ে জগদ্দল সাথে নিয়ে ৷ তখনও দুজন অজ্ঞাত কি শঙ্কা তাদের জন্য প্রতীক্ষমান… যথারীতি তারা দুজনে শালুকের উপবনে উপস্থিত ৷ নীরা তো অধীর আগ্রহে বিগলিত, সুনীল আসামাত্র তাকে বলে কবিতা শোনানোর কথা ৷ সুনীল বলে নীরার সঙ্গে তো কথাই হয়না তাই আগে কিছুক্ষণ বাক্যালাপ হোক তারপর উপসংহার মানে কবিতা টানা হবে ৷ নীরা স্বীকৃত হয় ৷ সুনীল নীরাকে জিজ্ঞেস করে সে কোন ক্লাসে পড়ে? নীরা বলে 10, সুনীল আরো জিজ্ঞেস করে এরপরে সে কি নিয়ে পড়বে কলা, বিজ্ঞান না বাণিজ্য ৷ নীরা বলে বিজ্ঞান ৷ সুনীল তখন নিজেও জানায় সে বিজ্ঞানের ছাত্র ৷ নীরা সুনীলের কাছে জানতে চায় যে সুনীলের প্রিয় বিষয় কি? সুনীল বলে অঙ্ক, নীরা বলে তারও অঙ্ক ভীষণ ভালো লাগে, এবং পরে সে এটাকে নিয়েই এগোতে চায় ৷ এদিকে ওই দুটো ছেলে তাদের সর্বক্ষণ অনুসরণ করে তারা কি করছে এবং কখন তারা সুযোগ পাবে তাদের কার্যসিদ্ধি সাধনের ৷ একসময় আলাপচারিতার উপান্তে সুনীল নীরাকে তার সেই কবিতা শোনাতে শুরু করে ৷ কবিতার নাম ‘ভালোবাসি ভালোবাসি’ ৷ কবিতার শেষ পঙক্তি “দূর থেকে শুনব তোমার কন্ঠস্বর, বুঝব তুমি আছ, তুমি আছ ভালোবাসি, ভালোবাসি……..!” বলামাত্র দুটো ছেলে ঝাঁপিয়ে পড়লো নীরা ও সুনীলের গায়ে, নীরা আহত হচ্ছে দেখে সুনীলও বাঁচাতে নীরাকে চেষ্টা করলো, কিন্তু পারলো না ৷ বর্ষবরণের রাতে শেষ হয়ে গেল একটা মেয়ের উঠতি বছর, সুনীল পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছিল কিন্তু ছেলেদুটো সুনীলকে ধরে ফেলে এলোপাথাড়ি কোপ বসায় সুনীলের পেটে ও পিঠে ৷ ভেসে যায় ছন্দে-স্মৃতির গন্ধে-রক্তবর্ণে; বাতাসে কূলপ্লাবী এক কিশলয় কন্ঠস্বর নীরাআআআআ!!! ভালোবাসিইইই… ৷ নীরা তখন……

 

 

কীভাবে লেখা পাঠাবেন?
নীচে উল্লিখিত হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার কিংবা ইমেল আইডিতে লেখা পাঠাতে পারবেন।
হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার~ 9635459953
ইমেল আইডি~ bengalliveportzine@gmail.com
লেখার সঙ্গে নিজের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর এবং একটি ছবি পাঠানো আবশ্যক।
ভ্রমণ কাহিনীর সঙ্গে নিজের তোলা দুটো ছবি পাঠাতে হবে।

 

Related News

163 Comments

  1. Hey there! This post could not be written any better!Reading through this post reminds me of my previousroom mate! He always kept talking about this. I will forwardthis article to him. Fairly certain he will have a goodread. Many thanks for sharing!

  2. I am not sure where you’re getting your information, but good topic.I needs to spend some time learning more or understanding more.Thanks for excellent info I was looking for this info for my mission.

  3. A motivating discussion is worth comment. I think that you need to write more about this issue, it may not be a taboo subject but generally folks don’t talk about such issues. To the next! Kind regards!

  4. I blog often and I genuinely appreciate your content. This great article has really peaked my interest. I will book mark your blog and keep checking for new information about once per week. I subscribed to your Feed as well.

  5. Hey! Would you mind if I share your blog with my facebook group?There’s a lot of folks that I think would really enjoy your content.Please let me know. Thanks

  6. Right now it appears like WordPress is the preferred blogging platform available right now.(from what I’ve read) Is that what you’re using on your blog?

  7. Hey There. I discovered your blog using msn. That is a really neatly written article. I will be sure to bookmark it and return to read more of your helpful information. Thank you for the post. I will definitely comeback.

  8. What’s up mates, how is the whole thing, and what you desire to say regarding thisparagraph, in my view its actually remarkable in favor of me.

  9. I have not checked in here for a while since I thought it was getting boring, but the last few posts are good quality so I guess I will add you back to my everyday bloglist. You deserve it my friend 🙂

  10. Hi there, just became alert to your blog through Google, and found that it is really informative.I am going to watch out for brussels. I’ll appreciate if you continuethis in future. A lot of people will be benefited from your writing.Cheers!

  11. magnificent points altogether, you simply gained a new reader.What would you recommend in regards too your publishthat you simply made some dazys iin the past? Any sure?

  12. I am now not positive the place you are getting your info, however great topic. I must spend a while finding out more or figuring out more. Thank you for magnificent info I used to be in search of this information for my mission.

  13. Thanks , I’ve just been searching for information approximately this topicfor a while and yours is the greatest I’ve found out so far.However, what concerning the bottom line? Are you positive about the supply?

  14. Hello! I could have sworn I’ve been to this blog before but after reading through some of the post I realized it’s new to me. Anyhow, I’m definitely glad I found it and I’ll be bookmarking and checking back often!

  15. At this time it seems like BlogEngine is the preferred blogging platformavailable right now. (from what I’ve read) Is that what you are using on yourblog?

  16. Very interesting points you have remarked, thankyou for posting . “History is a cyclic poem written by Time upon the memories of man.” by Percy Bysshe Shelley.

  17. Hello! I know this is kind of off topic but I was wonderingif you knew where I could find a captcha plugin for my comment form?I’m using the same blog platform as yours and I’m having difficulty finding one?Thanks a lot!

  18. I’d should check with you here. Which is not one thing I usually do! I get pleasure from studying a publish that may make folks think. Additionally, thanks for permitting me to remark!

  19. Thanks for some other magnificent post. Where else may anyone get that type of information in such a perfect way of writing?I’ve a presentation subsequent week, and I am on the search for such information.

  20. Thank you for the good writeup. It in fact was a amusement account it.Look advanced to more added agreeable from you!However, how could we communicate?

  21. I don’t even know the way I finished up right here,but I assumed this put up was great. I do not realize who you’re however definitely you’re going to afamous blogger in case you are not already. Cheers!

  22. Thanks for one’s marvelous posting! I truly enjoyed readingit, you happen to be a great author.I will remember to bookmark your blogand will often come back sometime soon. I want to encourage oneto continue your great writing, have a nice evening!

  23. I do agree with all the ideas you have presented in your post. They’re very convincing and will definitely work. Still, the posts are very short for novices. Could you please extend them a little from next time? Thanks for the post.

  24. Hello there, just became aware of your blog through Google, and found that it’s truly informative. I’m gonna watch out for brussels. I will be grateful if you continue this in future. Many people will be benefited from your writing. Cheers!

  25. Normally I don’t learn article on blogs, but I wish tosay that this write-up very forced me to check out and do so!Your writing taste has been surprised me. Thank you, quite great article.

  26. A motivating discussion is worth comment. I believe that you need to write more on this issue, it might not be a taboo matter but generally people don’t discuss these topics. To the next! Cheers!

  27. Xoilac Tv Trực Tiếp Soccer vtv3 hd trực tuyến nhanh nhấtĐội tuyển chọn futsal Việt Nam đã có một trận đấu đồng ý được trước đối thủ đầy mức độ mạnh Lebanon. Kết trái Bà Rịa-Vũng Tàu vs Bình Phước thời điểm hôm nay 18h00 ngày 5/5, Hạng nhất Việt Nam.

  28. Aw, this was an exceptionally good post. Finding the time and actual effort to produce a very good articleÖ but what can I sayÖ I hesitate a whole lot and never manage to get anything done.

  29. Hi! Do you know if they make any plugins to assist with SEO? I’m trying to get my blog to rank for some targeted keywords but I’m not seeing very good gains. If you know of any please share. Thanks!

  30. When I originally commented I clicked the «Notify me when new comments are added» checkbox and now each time a comment is added I get four emails with the same comment. Is there any way you can remove people from that service? Thanks a lot!

  31. Excellent post. I was checking constantly this blog and I am impressed!Very useful info specially the last part 🙂 I care for suchinformation much. I was looking for this particularinfo for a long time. Thank you and goodluck.

  32. This awesome blog is definitely entertaining additionally amusing. I have chosen many handy tips out of this amazing blog. I ad love to return again and again. Thanks a bunch!

  33. Жизненные обстоятельства заставили меня искать срочные средства. На yelbox.ru я нашел огромный выбор МФО с займами на карту без отказа. И займ под 0% стал настоящим подарком в трудный момент.

  34. Оказавшись в сложной ситуации, мне срочно потребовались дополнительные средства. Обратившись к Yandex, я нашел сайт wikzaim, на котором представлены актуальные МФО 2023 года. Благодаря удобному интерфейсу и развернутой информации, я быстро нашел подходящий вариант и получил необходимую сумму.

  35. wonderful points altogether, you just won a logo new reader. What might you recommend in regards to your put up that you just made a few days in the past? Any positive?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button