নতুন বছরের শুরুতেই নয়া উপহার নিয়ে হাজির কুলিক পক্ষীনিবাস

চলতি বছরে পরিযায়ীদের সংখ্যা কিছুটা কমেছে রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাসে। বিগত বছরের তুলনায় পাঁচ হাজার ৪৭৪টি পাখি কম এসেছে চলতি বছরে। ২০১৯ সালের কুলিক পক্ষীনিবাসে পাখি গণনার ফলাফল সামনে আসতেই এই তথ্য উঠে আসে।
Bengal Live রায়গঞ্জঃ নতুন বছরের শুরুতেই পর্যটকদের জন্য উপহার নিয়ে হাজির কুলিক পক্ষীনিবাস। এমু, টার্কি,কচ্ছপ,খরগোস, নানান রঙের বিদেশী প্রজাতির মাছের পাশাপাশি এবার দেশী মাছের একগুচ্ছ সম্ভার নিয়ে প্রস্তুত এশিয়ার মধ্যে অন্যতম বৃহৎ পরিযায়ী পাখির দেশ কুলিক। চিতল, রুই কাতলা,চিংড়ি,পুটি,বোরলীর দিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন অ্যাকোয়ারিয়াম। ফলে শীতের মরশুমে পর্যটকদের কাছে কুলিক যে বাড়তি আনন্দ নিয়ে হাজির হয়েছে সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
চলতি বছরে পরিযায়ীদের সংখ্যা কিছুটা কমেছে রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাসে। বিগত বছরের তুলনায় পাঁচ হাজার ৪৭৪টি পাখি কম এসেছে চলতি বছরে। ২০১৯ সালের কুলিক পক্ষীনিবাসে পাখি গণনার ফলাফল সামনে আসতেই এই তথ্য উঠে আসে। ২০১৮ সালে মোট পাখির সংখ্যা ছিল ৯৮৫৬২। এবার সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৯৩০৮৮। পর্যাপ্ত খাবারের যোগান ও সুস্থ পরিবেশের কারণেই প্রতি বছর লাফিয়ে লাফিয়ে পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছিল কুলিক পক্ষীনিবাসে। তবে হঠাৎ করে কেন চলতি বছরে পাখির সংখ্যা তা খতিয়ে দেখছে বন বিভাগ।
তবে তাতে করে কুলিকের গরিমা যে একেবারেই কমছে না তা পরিষ্কার বন দপ্তরের উদ্যোগে। কুলিককে আরও সৌন্দর্যময় গড়ে তোলা হয়েছে। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বন্যপ্রাণীদের ছবি ও তাদের সম্পর্কে নানান তথ্য সহকারে নতুন রূপে গড়ে তোলা হয়েছে কুলিক ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার। এর পাশেই রয়েছে আহত ও অসুস্থ প্রাণীদের জন্য রেসকিউ সেন্টার। আরও একটু এগিয়ে গেলেই দেখা যাচ্ছে, শীতের দুপুরে রোদ পোহাচ্ছে শতাধিক কচ্ছপ। আর তাদের পাহারা দিচ্ছে বিশালাকার দুই এমু পাখি। পাশেই রয়েছে একটি ওয়াচ টাওয়ারও। এদিকে, নানান প্রজাতির পাখিদের বাসস্থান হয়ে উঠেছে বিশালাকার দুটি এনক্লোজার। শতাধিক রকমারি পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে এলাকা।
পাশেই তৈরি হয়েছে অ্যাকোয়ারিয়াম। যেখানে রয়েছে প্রায় ৩১ প্রজাতির মাছ। রয়েছে দশটিরও বেশি অ্যাকোয়ারিয়াম। যেখানে, দেখা যাচ্ছে, সিলভার মুনি, স্পটেট স্ক্যাট, চাইনিজ হাইফিন ব্যান্ডেড শার্ক, ওরনেট বিচির সিলভার আরওয়ানা, আফিকান কিচলিড, থিন বার স্কমবার্গকি সিলভার ডলার, সিলভার শার্ক, জাপানিজ কই, পাকু, শাকারমাউথ ক্যাটফিস, অঞ্জেল, ফেদার ফিস, ব্ল্যাক ডেবিল, জেব্রা তেলাপিয়া, ব্লাড প্যারোট কিচলিড, অস্কার, রেড ট্যাক্সাস কিচলিড, রেড টেইল ক্যাটফিস, এলিগেটর গার, রেড টেইল টাইগার শোভেল নোস ক্রস, সিবেরাম, টেট্রা, টাইগার ও ডলার ফিসদের চলাফেরা করতে।
এবার রঙিন মাছের পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি অ্যাকোয়ারিয়ামে দেখা যাবে দেশী প্রজাতির মাছেদের। বন সূত্রে খবর, গলদা ও বাগদা দুই প্রজাতির চিংড়ি ছাড়াও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন নদী থেকে প্রাপ্ত মাছেদের স্থান দেওয়া হয়েছে এই অ্যাকোয়ারিয়ামে। মূলত, পর্যটকদের পাশাপাশি পড়ুয়ারা যেন স্থানীয় মাছ চিনতে ও জানতে পারে সেই বিষয়টিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।