
Nblive অপরাজিতা জোয়ারদারঃ উত্তম কুমার – বাঙালীর মনে প্রাণে আক্ষরিক অর্থে যে মানুষটি জায়গা করে নিয়েছেন একজন প্রকৃত মহানায়কের। আজ আমরা তাঁর ৩৮তম প্রয়াণ দিবসে তাঁকে স্মরণ করছি… তাঁর উপস্থিতি আজও আমাদের মাঝে সমান প্রাসঙ্গিক। তাঁর চাউনি.. তাঁর সংলাপ বলার ধরণ…তাঁর অভিনীত সবকটি চরিত্র আজও প্রত্যেক বাঙালীর স্মৃতিপটে যত্নে রাখা। নিজেকে নায়ক হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা শুধু নয় চিরস্থায়ী ভাবে মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়ার দক্ষতা হয়ত শুধুমাত্র মহানায়কেরই থাকে। কিংবদন্তি অভিনেতা উত্তম কুমার ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই আচমকাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে টলিউড।
১৯৫০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত রুপোলী পর্দায় দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। সময় বদলেছে – তবে আজও অসংখ্য অভিনেতার কাছে অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব উত্তম কুমার। তৎকালীন সময়ের প্রেক্ষাপটে রুপোলী পর্দায় আদর্শ পুরুষ বলতে এক কথায় যাঁর নাম আসতো তিনি উত্তম কুমার। তাঁর অভিনীত চরিত্রের সাথে যেমন হেসেছে দর্শকরা -আবার চোখের কোণে এসেছে নোনা জলও- আবার অভিমানে মন ভারাক্রান্ত হয়েছে বহুবার। বাঙলা সিনেমার সবচাইতে রোমান্টিক নায়ক ছিলেন তিনি। “সাড়ে চুয়াত্তর”, “অগ্নি পরীক্ষা”, ” ভ্রান্তিবিলাস”,”ছদ্মবেশী”, “হারানো সুর”, সর্বোপরি “সপ্তপদী” বাঙালী হৃদয়ে সেরা ছবির জায়গা দখল করে রেখেছে। অস্কার বিজয়ী পরিচালক সত্যজিত রায় পরিচালিত “নায়ক”এ উত্তম কুমার ছাড়া হয়ত কাউকে ভাবাই যেতো না। ১৯৬৮ সালে “অ্যান্টণী ফিরিঙ্গী” এবং “চিড়িয়াখানা”ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। শুধু বাংলা নয়,হিন্দি ‘আমানুষ’ ছবির জন্য ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডসে মনোনীত হন তিনি। সঙ্গীত প্রেমী উত্তম কুমার শুধু অভিনয় নয়, গান কম্পোজ করার ক্ষেত্রেও প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন।নিজের প্রোডাকশন হাউজও ছিল তাঁর। বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগের দুই দশক জুড়ে উত্তম কুমার -সুচিত্রা সেনের হিট জুটি পর পর কালজয়ী সিনেমা উপহার দিয়েছে দর্শকদের। ৩০ টি ছবিতে স্ক্রিন ভাগ করেছিলেন এই বিখ্যাত জুটি। শাপ মোচন (১৯৫৫), সাগরিকা (১৯৫৬), হারানো সুর (১৯৫৭), সপ্তপদী (১৯৬১), বিপাশা (১৯৬২), গৃহদাহ (১৯৬৭) এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। আজও উত্তম কুমার অভিনীত ছবির গান মুখে মুখে ফেরে সব বাঙালীর। তাই উত্তম কুমার আজও বেঁচে আছেন আমাদের মনে। আর যতদিন বাঙলা সিনেমা থাকবে ততদিনই তিনি থাকবেন..এভাবেই…