
Nblive অপরাজিতা জোয়ারদারঃ ‘যাত্রীগণ কৃপয়া ধ্যান দে…….’- এই শব্দটি শুনলেই আমাদের মনে পড়ে যায় ভ্রমণের নানা স্মৃতি, আবার কখনও ব্যস্ত জীবনের বেশ খানিকটা কোলাজ। দৈনন্দিন গন্তব্যে পৌঁছনোর তাড়াহুড়ো হোক বা হঠাৎ বেড়িয়ে আসার জন্য প্লাটফর্মে কাটানোর সময়, রেল ষ্টেশনে গেলেই এই কণ্ঠস্বর বার বার শুনেছি আমরা। কিন্তু গন্তব্যে যাওয়ার সঠিক ট্রেনের হদিশ যে কণ্ঠস্বর এতদিন ধরে দিয়ে এসেছে আমাদের, কে তিনি? কেমনই বা দেখতে ? চলুন জেনে নেই সেই অজানা মানুষটি সম্পর্কে।- সাল টা ১৯৮২।
সেন্ট্রাল রেলওয়েতে অ্যানাউন্সারের পদের জন্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রাথমিক ভাবে দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে কাজে যোগ দেন এই বিখ্যাত কন্ঠস্বরের অধিকারিণী সরলা চৌধুরী। এইভাবে প্রায় চার বছর কাজ করেন সরলা দেবী। তার এই শ্রুতিমধুর কণ্ঠস্বরের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৬ সালে সেন্ট্রাল রেলওয়ের তরফে তাঁকে স্থায়ী অ্যানাউন্সার হিসেবে নিয়োগ করা হয়। তবে আপাতদৃষ্টিতে সহজ কাজ মনে হলেও সেই আমলে কিন্তু মোটেও সহজ ছিলোনা এই কাজ। কম্পিউটার চালিত পরিকাঠামো না থাকায় প্ল্যাটফর্ম অ্যানাউন্সমেন্ট যথেষ্ট খাটনির কাজ ছিলো। শুধু তাই নয়, হঠাৎ কোনো জরুরি ঘোষণার ক্ষেত্রেও অসুবিধার সম্মুখীন হতে হত।
এক ষ্টেশন থেকে আরেক ষ্টেশনে ছুটতে হত তাকে। হিন্দির পাশাপাশি মরাঠি ভাষাতেও ঘোষণা করেছেন তিনি। সেই সময় গোটা রেকর্ডিং এর প্রক্রিয়া শেষ করতে ৩-৪ দিন সময় লেগে যেত বলে জনান সরলা দেবী। পরিবর্তিতে ট্রেন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের হাতে প্ল্যাটফর্মে ঘোষণার দায়িত্ব দেওয়া হলে সরলা দেবীর কণ্ঠস্বরের ঘোষণাটিকেই কন্ট্রোল রুমগুলিতে স্ট্যান্ড বাই করে সেভ করে তারা। আর এরপর থেকেই ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ট্রেন পরিষেবায় দেশের সব স্টেশনেই হিন্দি ভাষায় সরলা দেবীর কণ্ঠস্বরে ঘোষণা চালানো হয়। যদিও বিগত ১২ বছরে ব্যক্তিগত কারণে অ্যানাউন্সারের কাজ থেকে অব্যাহতি নিয়ে সরলা দেবী রেলওয়ের ওভারহেড ইকুইপমেন্টস বিভাগের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। সরলা দেবীর কণ্ঠস্বর দেশের সব মানুষ আজও শুনছেন – এই অভিজ্ঞতা ঠিক কেমন? – এই প্রশ্ন করা হলে সরলা দেবী জানান, খুবই ভালো লাগে তার। বছরের পর বছর মানুষ তাকে তার কন্ঠস্বরে মনে রাখছেন..এই উপলব্ধিও বেশ নাড়া দেয় সরলাদেবীকে।