লাইফ স্টাইল

কুড়িটি গাছেই কোটিপতি, পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান গাছটি জন্মায় ভারতের মাটিতেই

পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান গাছ এটি,২ কাঠা জমিতে চাষ করেই হয়ে যেতে পারেন কোটিপতি! যেহেতু কম জলসেচ, পরিচর্যা ছাড়াও এই গাছ বেড়ে উঠতে পারে তাই খরা প্রবণ এলাকাতেও এই গাছের চাষ করা যায়। আর যেহেতু এর ঔষধি গুণ অসাধারণ, তাই এই গাছের মূল্যও অনেক বেশি।

 

Bengal Live স্পেশালঃ ভারত কৃষিপ্রধান দেশ। তার কারণ, আমাদের দেশের জনসংখ্যার একটা বিশাল অংশ চাষাবাদের সাথে যুক্ত।ধান, গম, চা, পাট থেকে শুরু করে বিভিন্ন ফসল উৎপাদিত হয় আমাদের দেশ ভারতবর্ষে। কিন্তু এমন একটি গাছের চাষও আমাদের দেশে হয় যেটি পৃথিবীর সবচেয়ে দামি গাছ।

 

 

কী ভাবছেন ? কী এই গাছ, যা ২ কাঠা জমিতে চাষ করলেই কোটি টাকা উপার্জন করা যেতে পারে ? তবে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক সেই গাছ সম্বন্ধে। চন্দন গাছের (Santalum paniculatum) নাম কমবেশি সকলেই শুনেছেন। বাড়িতে পুজোয় হোক বা কোনো শুভ অনুষ্ঠানে, চন্দনের ফোঁটা দেবার জন্য এই গাছের কাঠ ঘষেই চন্দন তৈরী করা হয়। আর এই চন্দন গাছই হল পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান গাছ।

 

শ্বেতচন্দন, লাল বা রক্তচন্দন এবং পীতচন্দন এই তিন ধরনের চন্দনের নাম শোনা গেলেও বাস্তবে সাদা ও লাল এই দুই ধরনের চন্দনই বেশী সহজলভ্য। তবে শ্বেত চন্দন চাষ বেশ লাভজনক। ১ কেজি শ্বেতচন্দন কাঠের দাম প্রায় ২০০০০ টাকা।

 

যদি আপনি এক একর (প্রায় তিন বিঘা) জমিতে এই গাছ চাষ করেন তাহলে গাছগুলি পূর্ণ বয়স্ক হলে আপনি ৩০-৩৫ কোটি টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন। হরিয়ানার এক কৃষক বহু বছর ধরে চন্দন চাষের সাথে যুক্ত রয়েছেন। তবে এই গাছের চাষ সম্বন্ধে বেশিরভাগ লোকেরই যথেষ্ট কম জ্ঞান রয়েছে। চন্দন গাছ বিক্রির উপযুক্ত হতে মোট ১৩- ১৫ বছর সময় লাগে। কোনো ব্যক্তি যদি একটি গাছও চাষ করেন তাহলে কমপক্ষে ৬-৭ লক্ষ টাকা উপার্জন করা তেমন দুষ্কর ব্যাপার নয়। চলুন ৮ টি পয়েন্টে চন্দন গাছের চাষ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

 

 

১)চন্দন চাষে লাভ যেমন রয়েছে তেমনি এই গাছের চাষ কিন্তু বেশ ব্যয়বহুল।আপনি যদি একসাথে অনেকগুলি চারাগাছ কেনেন তাহলেও প্রায় ৪৫০ টাকা দাম পড়বে প্রতি চারাগাছের।

 

২)আর একটি বা দুটি কিনলে আরো বেশি দাম পড়বে।এই গাছটি বিক্রির উপযুক্ত হতে প্রায় ১৩-১৫ বছর সময় লাগে।প্রথম ৪-৫ বছর গাছটিতে তেমন সুগন্ধ থাকে না;এই গাছ যেহেতু অনেক মূল্যবান তাই চুরি যাওয়ার ভয় থাকে এই গাছের।

 

৩)চন্দন গাছের চাষ করলে ,এর সাথে অবশ্যই একটি হোস্ট(পোষক) গাছের চাষ করতে হবে।আর চাষের সময় দুটি গাছেরই সমান যত্ন নিতে হবে।এই হোস্ট গাছ চন্দন গাছকে পুষ্টি রস জোগান দেওয়ার পাশাপাশি প্রাকৃতিক সার হিসেবেও কাজ করে।হোস্ট গাছ হিসেবে কাজানুস কাজান অথবা বাবলা জাতীয় গাছ লাগাতে পারেন। চন্দন গাছের থেকে ১.৫-২ মিটার দূরত্বে হোস্ট গাছগুলি লাগাতে হবে। মনে রাখবেন হোস্ট গাছটি নষ্ট হলে চন্দন গাছটিও নষ্ট হয়ে যাবে।

 

৪)চন্দন গাছের চাষে অল্পমাত্রায় জলের প্রয়োজন।কাজেই জলা জমিতে চন্দন চাষ করলে তা অকালেই পচে যেতে পারে।

 

৫)পাথুরে জমিতে চন্দন চাষ ভালো হয়। বার্ষিক গড় ৮০-১২০ সেমি বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন। মাটির পিএইচ ৬-৭ হলে তা চন্দন চাষের পক্ষে উপযোগী।

 

৬) অত্যধিক তাপমাত্রা যুক্ত অঞ্চল চন্দন চাষের অনুকূল পরিবেশ নয় কেননা চন্দন মূলত ৫°-৪০° তাপমাত্রা পর্যন্ত ভালোমতো বেড়ে উঠলেও এর চেয়ে বেশি উষ্ণতায় চন্দনের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়!

 

৭)একটা চন্দন গাছ পূর্নবয়স্ক হলে অর্থাৎ মোটামুটি ১৩-১৫ বছর বয়স হলে প্রায় ২০-২৫ কেজি চন্দন কাঠ পাওয়া যায় যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায়  ৬-৭ লক্ষ টাকা।অর্থাৎ চন্দন চাষের মাধ্যমে একটা ভালো পরিমাণ টাকা উপার্জন করতে পারেন আপনি।

 

৮)তবে চন্দন গাছ চাষ করলেও বাইরের দেশে তা রফতানি করার অধিকার নেই আপনার,আপনি কেবল সরকারকেই চন্দন কাঠ বিক্রি করতে পারবেন।শুধুমাত্র সরকারই চন্দন কাঠ রফতানি করতে পারে বিদেশে।

Back to top button