রায়গঞ্জ

অবশেষে রায়গঞ্জে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রীর বাড়িতে কোয়ারান্টাইন পোস্টার সাঁটলোই প্রশাসন

বিগত কয়েকদিন থেকেই মন্ত্রীর বাড়িতে কোয়ারান্টাইন নোটিশ সাঁটানো নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে রায়গঞ্জে। অবশেষে রায়গঞ্জের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যান প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর আবাসনে কোয়ারান্টাইন নোটিশ সাঁটলো উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন।

Bengal Live রায়গঞ্জঃ অবশেষে রায়গঞ্জের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যান প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর আবাসনে কোয়ারান্টাইন নোটিশ সাঁটলো উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। সোমবার মন্ত্রীর আবাসনের একদম বাইরের দিকে হোম কোয়ারান্টাইন নোটিশ লাগানো হয় জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে। মন্ত্রীর নাম লেখা পোস্টারে ৩১ মার্চ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত হোম কোয়ারান্টাইন পিরিয়ডের উল্লেখ রয়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান নি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী৷ বক্তব্য মেলেনি জেলা প্রশাসন স্তরেও।

বিগত কয়েকদিন থেকেই মন্ত্রীর বাড়িতে কোয়ারান্টাইন নোটিশ সাঁটানো নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে রায়গঞ্জে। প্রথম পঞ্চায়েত স্তরের দুই স্বাস্থ্য কর্মী, পরে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ও রায়গঞ্জ থানার আইসি নোটিশ সাঁটতে গিয়ে মন্ত্রীর বাধা পেয়ে ফিরে আসেন। তবে সোমবার সবার অজান্তেই কার্যত এই নোটিশ মন্ত্রীর আবাসনের সামনে লাগানো হয়।

গত ৩১ মার্চ দিল্লি থেকে কলকাতা, এরপর রায়গঞ্জে আসেন সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী৷ এরপর ২ এপ্রিল শহরের রাস্তায় বেরিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক বিলি করেন তিনি। সেই থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত ও রায়গঞ্জ পুরসভার পুরপতি সন্দীপ বিশ্বাস লিখিত ভাবে অভিযোগ জানান জেলা পুলিশ ও প্রশাসনকে। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, লকডাউনের পর কী করে কলকাতা থেকে রায়গঞ্জে এলেন মন্ত্রী ? কোয়ারান্টাইনে না থেকে কেমন করেই বা রাস্তায় বেরিয়ে পড়লেন দেবশ্রী দেবী ?

এরপরই জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে মন্ত্রীর বাড়ির কোয়ারান্টাইন নোটিশ লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। নোটিশ দেখে আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দারা অস্বস্তিতে পড়বেন বলে প্রথমে নোটিশ সাঁটতে দেননি মন্ত্রী। পরে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ও রায়গঞ্জ থানার আইসি গেলে, সরকারি কোন নির্দেশবলে তাঁরা ওই পোস্টার সাঁটতে এসেছেন, সেই নির্দেশিকাপত্র দেখতে চান মন্ত্রী। কার প্ররোচনায় এইসব হচ্ছে তা কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার ও বিএমওএইচের কাছে জানতে চান তিনি। মন্ত্রী এও জিজ্ঞেস করেন, সেদিন তো অন্য সমস্ত সাংসদ ও মন্ত্রীরা দিল্লি থেকে বাড়ি ফিরেছেন। তাঁদের সকলের বাড়িতে এই নোটিশ লাগানো হয়েছে কি ? দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি চলার পর অবশ্য কোয়ারান্টাইন নোটিশ না লাগিয়েই ফিরে আসতে হয় সরকারি আধিকারিকদের।

দেবশ্রী চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “গত দুইদিন থেকে উত্তর দিনাজপুর জেলায় তামাশা চলছে।” বিধায়ক ও পুরপতিকে মাতব্বর আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “ওঁদের হঠাৎ মনে হয়েছে দেবশ্রী চৌধুরীকে কোয়ারান্টাইনে পাঠাতে হবে। সেই শুনে পুলিশও নাচছে। দেশের অন্য মন্ত্রী ও সাংসদ যাঁরা দিল্লি থেকে নিজের এলাকায় ফিরেছেন তাঁদেরও বাড়িতে এই নোটিশ লাগানো হয়েছে কিনা আমি সেই রেফারেন্স দেখতে চেয়েছি। অর্ডারের কপিও দেখাতে বলেছি। ঘৃন্য রাজনীতির সীমা থাকা উচিৎ। যাঁরা আমাকে সাবধান করতে এসেছিলেন, তাঁরা নিজেরাই মাস্ক ছাড়া ছিলেন। সামান্য কয়েক ফুট জায়গার মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে কী করে তাঁরা আমাকে সাবধান হতে বলেন ?”

গোটা ঘটনায় তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী।

এদিন স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে কোয়ারান্টাইন নোটিশ সাঁটানোর পর দেবশ্রী দেবীর কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি৷ মেলেনি প্রশাসনিক আধিকারিকদের কারোর বক্তব্যও।

Related News

Back to top button