রায়গঞ্জ

দিনমজুরের ছেলের স্বপ্নের উড়ান, জেলার গর্ব ইটাহারের আনন্দ

ইটাহারের হাসুয়া গ্রামের বাসিন্দা আনন্দ বর্মন। কখনও রিক্সা চালিয়ে, কখনও ভ্যান, কখনও আবার দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান আনন্দের বাবা প্রেম বর্মণ। অভাবী হলেও স্বপ্ন ছিল চোখে।

 

 

Bengal Live ইটাহারঃ সংসার কোনও মতে চলে। কখনও আবার থমকে থাকে। করোনা আবহে দীর্ঘ লকডাউন যেন আর্থিক অনটনের আরও অন্ধকার টেনে আনছিল নুনভাতের এই সংসারে। কিন্তু ওই যে কথায় আছে — “মেঘ দেখে ভাই করিসনে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে”। কঠিন মেঘ কাটিয়ে সেই সূর্য দেখা দিল আনন্দর পরিবারে।

ইটাহারের হাসুয়া গ্রামের বাসিন্দা আনন্দ বর্মন। কখনও রিক্সা চালিয়ে, কখনও ভ্যান, কখনও আবার দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান আনন্দের বাবা প্রেম বর্মণ। অভাবী হলেও স্বপ্ন ছিল চোখে, মেধাবী ছেলে আনন্দ একদিন চিকিৎসক হয়ে তাঁর সকল দুঃখ দূর করবে। সেই স্বপ্নই যেন সত্যি হওয়ার মুখে। চরম আর্থিক দুর্দশাকে সাথে নিয়েই নিট পরীক্ষায় সাফল্য পেল ভুপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র আনন্দ বর্মন। অল ইন্ডিয়া র‍্যাঙ্কিং ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৬০৬। ক্যাটাগরি র‍্যাঙ্কিং ৫৭৬০। মোট ৪৬৯ নম্বর পেয়ে নিজের স্বপ্নের উড়ান দিতে প্রস্তুত আনন্দ। মালদা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছে আনন্দ। ছাত্রের এমন সাফল্যের কথা জানতে পেরে এদিন আনন্দের বাড়িতে যান ভুপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

আনন্দ বর্মন জানিয়েছেন, পরিবারের পক্ষে কোনও ভাবেই উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে টাকা জোগার করা সম্ভব ছিল না। স্কুলের শিক্ষক ও এক আত্মীয়ের সাহায্যে আজ ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছে সে।

পেশায় দিনমজুর বাবা প্রেম বর্মন বলেন, মাধ্যমিকের পর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়েছিল ছেলে। কিন্তু আমার পক্ষে ছেলেকে পড়াশুনা করানো সম্ভব ছিল না। স্কুলের শিক্ষকরা আমাকে সব রকমের সাহায্য করেছিলেন। ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছে আনন্দ। শিক্ষকরা আশ্বাস দিয়েছেন পাশে থাকার।

ভুপালচন্দ্র বিদ্যাপীঠের শিক্ষকরা বলেন, মেধাবী ছাত্রের পাশে আমরা আগামী দিনেও থাকবো। আনন্দ বর্মনকে আজ আমরা অভিনন্দন জানিয়েছি। আনন্দ প্রমাণ করে দিয়েছে লক্ষ্য স্থির থাকলে যে কোনও পরিবার থেকেই সফল হওয়া সম্ভব।

Related News

Back to top button