বিনোদন

সাহিত্য অ্যাকাডেমির ‘ফেলো’ সম্মানে ভূষিত হলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

সাহিত্য অ্যাকাডেমির সাধারণ পরিষদের বৈঠকের পর শীর্ষেন্দু সহ আট জন বিদগ্ধ সাহিত্যিককে অ্যাকাডেমির তরফে ‘ফেলো’ নির্বাচন করার কথা ঘোষণা করা হয়। এটিই সাহিত্য অ্যাকাডেমির সর্বোচ্চ সম্মান।

 

Bengal Live ডেস্কঃ বহু বছর পর বাংলার ঘরে সাহিত্য অ্যাকাডেমির ‘ফেলো’র সম্মান। সুভাষ মুখোপাধ্যায়, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, শঙ্খ ঘোষের পর জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়কে তাঁদের সর্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত করল সাহিত্য অ্যাকাডেমি। প্রায় ৩৩ বছর আগে তাঁর ‘মানবজমিন’ উপন্যাসের জন্য তিনি ভূষিত হয়েছিলেন সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কারে। এরপর এবারে আবার অ্যাকাডেমির এই বিরল সম্মাননার পালক যুক্ত হল তাঁর মুকুটে।

শনিবার সাহিত্য অ্যাকাডেমির সভাপতি চন্দ্রশেখর কম্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় সংস্থার সাধারণ পরিষদের বৈঠক । এর পরই শীর্ষেন্দু সহ আট জন বিদগ্ধ সাহিত্যিককে অ্যাকাডেমির তরফে ‘ফেলো’ নির্বাচন করার কথা ঘোষণা করা হয়। এটিই সাহিত্য অ্যাকাডেমির সর্বোচ্চ সম্মান। এই সম্মান অ্যাকাডেমি সেই সাহিত্যিকদেরই জানায়, সংস্থার মতে যাঁরা ‘অমর সাহিত্যের স্রষ্টা’। এদিন অ্যাকাডেমির তরফে জানানো হয়, শীর্ষেন্দুর হাতে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে মাধ্যমে এই সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হবে।

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ছাড়াও আরও বিভিন্ন ভাষার সাত ভারতীয় লেখককে এই বিরল সম্মান জ্ঞাপন করেছে সাহিত্য অ্যাকাডেমি। সেই তালিকায় রয়েছেন ইংরেজি ভাষার সাহিত্যিক রাসকিন বন্ড, হিন্দি লেখক বিনোদ কুমার শুক্ল, সংস্কৃত পণ্ডিত-দার্শনিক হিন্দু অধ্যাত্মবাদী নেতা জগদ্গুরু স্বামী রামভদ্রাচার্য, মরাঠি কবি-প্রাবন্ধিক ভালচন্দ্র বনাজি নেমাড়ে, তামিল লেখক ও চিত্রনাট্যকার আর পার্থসারথি, মালায়ালম লেখক-সমালোচক ড. মুন্ডানত লীলাবতী এবং পঞ্জাবি লেখক-সমালোচক ড. তেজবন্ত সিং গিল।

সাপ্তাহিক ‘দেশ’ পত্রিকায় ১৯৫৯-এ ছোটোগল্প ‘জলতরঙ্গ’ প্রকাশের মধ্যে দিয়ে শীর্ষেন্দুর সাহিত্যযাত্রার শুরু। তার আট বছর পর ১৯৬৭ সালে প্রথম উপন্যাস ‘ঘুণপোকা’- প্রকাশ পেতেই পাঠক মহলে পরিচিত নাম হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এর পর একের পর এক হৃদয়গ্রাহী লেখা উপহার দিয়েছেন তিনি বাঙালিকে। ‘উজান’, ‘কাগজের বউ’, ‘যাও পাখি’, ‘মানবজমিন’, ‘দূরবীন’, ‘পারাপার’, ইত্যাদি উপন্যাস বারবার আলোড়ন তুলেছে পাঠক সমাজে। পাশাপাশি ছোটো গল্পের আঙিনাতেও তাঁর অবাধ যাতায়াত। কিশোর সাহিত্য রচনাতেও তিনি দেখিয়েছেন অকৃত্রিম মুন্সিয়ানা।তাঁর ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’, ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’, ‘নৃসিংহ রহস্য’, ‘পাতালঘর’, ‘নবিগঞ্জের দৈত্য’ মত রচনা ছোটো থেকে বড় মন কাড়ে সব্বার। ভূত-প্রেত-দৈত্য-দানবকে কলমের জাদুতে তিনি করে তুলেছেন আমাদের বন্ধু, আমাদের ঘরের লোক।

শুধু দুই মলাটের মধ্যেই শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সব লেখা আটকে থাকেনি, চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে তাঁর বহু উপন্যাসও। এছাড়াও তাঁর অসাধারন রচনাশৈলী তাঁকে এনে দিয়েছে আরও নানা পুরস্কার। তিনি বিদ্যাসাগর পুরস্কার, দু’ দফায় আনন্দ পুরস্কার, সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কারের মতো একাধিক পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন আগেই। এছাড়াও ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ সম্মানে সম্মানিত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button