Breathe: Into the Shadows দেখার আগে পড়ুন এই রিভিউ
Breathe Into the Shadows – এর মূল গল্প ছিল বেশ চমকপ্রদ। কিন্তু তার এক্সিকিউশনে ঘাটতি থাকায় দর্শকের মন জয় করতে অক্ষম। Amazon Prime Video – র ভারতীয় কন্টেন্ট নিয়ে দর্শকের প্রত্যাশা অনেক। আর এই প্রত্যাশা বাড়িয়েছে “ফ্যামিলি ম্যান”- এর মতো সিরিজ। তাই তাকে ধরে রাখতে হলে আর সচেতন হতে হবে। লিখেছেন সৌম্যদীপ গুহ।
Bengal Live বিনোদনঃ Amazon Prime এর নতুন সিরিজ Breathe-এর নতুন সিজিন Into the Shadows কে তারা সিজিন-২ বলছে না বরং Into the Shadows – এর প্রথম সিজিন বলে উল্লেখ করছেন। বড় জটিল বিষয়বস্তু। যাই হোক Breathe থেকে শুধুমাত্র অমিত সাধ ও হৃষিকেশ জোশি বহাল রয়েছে তাদের পুরনো চরিত্রে। বাকি সব নতুন। গল্পও নতুন। পুরনো সিরিজের সিক্যুয়েল এটি নয়। এবং এই সিরিজের শেষ অংশ বুঝিয়ে দেয় এর সিজিন-২ হবে এবং তাতেও আবার অভিষেক বচ্চন!
অমিতাভ পুত্র অভিষেকের সিনেমার ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০০০ সালে রিফিউজি দিয়ে। তারপর কুড়ি বছরে ৬৩ ছবিতে কাজ। কখনও সে মূল চরিত্রে কখনও বা পার্শ্ব চরিত্রে এবং বেশ কিছুতে বিশেষ উপস্থিতি। তার অভিনয়ের দক্ষতার কথা প্রায় সবারই জানা। তা সত্বেও এতগুলো সিনেমাতে তার উপস্থিতি অমিত পুত্রের জন্যই সম্ভব হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্য কেউ হলে বলিউড ছুঁড়ে ফেলে দিত বহু আগেই। অবশ্য পারেও নি তাকে আটকে রাখতে। সুযোগ দিতে দিতে ক্লান্ত হয়েছে সবাই। তার সিনেমার ক্যারিয়ারে মণিরত্নম-এর গুরু বাদ দিয়ে বলার মত বিশেষ কিছুই নেই। Breathe Into the Shadows – এর মাধ্যমে টিভিতে তার ফিরে আসা আশা জাগায়নি তেমন কারুর মধ্যেই। তবুও ভেবেছিল সে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করবে হয়তো। কারন সিরিজগুলোতে নিজেকে ভাঙা গড়ার প্রচুর জায়গা থাকে। কিন্তু সে আশায় কার্যত জল ঢেলে দিয়েছে। মাংসল চোয়ালের আড়ালে হারিয়ে গিয়েছে তার যাবতীয় অভিনয় সত্বা।
আরও পড়ুনঃ নিজেকে খুনের জন্য কন্ট্র্যাক্ট কিলার ! আফসোস দেখার আগে পড়ুন এই রিভিউ
হাতে কলম আর মাথায় ভাবনা অতএব যা খুশি তাই লিখে যাব আর দর্শক তা দেখে বাহ বাহ করবে এমন ভাবার কোন কারন নেই তা বোধহয় ভুলে গিয়েছেন পরিচালক ময়াঙ্ক শর্মা। আর যদি তেমন কিছু লিখতেই হয় তবে যেসব গল্পে লজিকের স্থান নেই তেমন লিখলেই হয়। কিন্তু গল্প যখন বিশেষ ঘরানার হবে তাতে লজিক অবশ্যাম্ভাবী। ১২ এপিসোড অর্থাৎ নিজের জীবনের ৯ ঘন্টা খরচ করার পর এমন লজিকহীন গল্প দেখানো মানে পাপ। তৃতীয় এপিসোডেই গল্প পরিস্কার অন্তত যারা ক্রাইম, রহস্য গল্প দেখতে পছন্দ করেন তাদের কাছে। গল্পের বিন্যাস তুলনামূলক ভাল। চরিত্রের লেয়ার দেখানোয় কোন আলসেমি করেনি পরিচালক। এবং ব্যাক্সটোরি সামঞ্জস্যপূর্ণ।
Breathe সিরিজে অমিত সাধ ক্রাইম ব্রাঞ্চ-এর অফিসার হিসেবে প্রথম থেকেই রয়েছে। অমিত সাধের প্রথম ছবি ২০১০ সালে ফুঁক-২। যদিও তাকে দর্শক চেনা শুরু করে অভিষেক কপুর-এর “কাই পো চেঁ” থেকে। সেই ছবি থেকে উঠে আসে আরো দুই তরুণ অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত ও রাজ কুমার রাও। এদের তিনজনের মধ্যে একমাত্র রাজ কুমার রাও বাকি দুজনকে কয়েক যোজন পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছেন অভিনয়ের জগতে তা অনস্বীকার্য। বাকি দুজন যখন পায়ের তলায় মাটির খোঁজে রাজ কুমার রাও তখন করে ফেলেছেন নিউটন এর মতো কাজ। অমিত সাধের অভিব্যক্তিহীন অভিনয় নজরে পড়তে বরাবরই ব্যর্থ। ফেসিয়াল অ্যানাটমি ব্যবহারে সে আজও পিছিয়ে। পরপর দুটো সিরিজে তার মধ্যে খুঁজে পাওয়ার মধ্যে তেমন কিছু ছিল না।
আরও পড়ুনঃ অনুরাগ কাশ্যপের চোকড্ – পয়সা বোলতা হ্যায়, দেখার আগে চোখ রাখুন এই লেখায়
গল্প একজন স্প্লিট পার্সোনালিটি বা ডুয়েল পার্সোনালিটির মানুষের। অর্থাৎ একজন মানুষ দুটো চরিত্র। এক মানুষ তার ভেতরের আরেকজন মানুষের ৬ বছরের মেয়েকে কিডন্যাপ করেতাকে দিয়ে তিনটে খুন করায়। আর এই দুই মুখ্য চরিত্রে রয়েছে স্বয়ং অভিষেক বচ্চন। একজন স্বাভাবিক হাঁটাচলা করে আরেকজন খুঁড়িয়ে। দুটো মানুষ বোঝানোর জন্য পরিচালক এই হাতিয়ার ব্যবহার করেছে। কিম্বা অভিষেক-কে দিয়ে এর চেয়ে বেশি কিছু করানো সম্ভব নয় বলেই এই পন্থা। অভিষেক এই দুই চরিত্রেই Bellow Average। এই দুই চরিত্রের পরস্পরের যাওয়া আসার লজিকে গিয়ে কাজ নেই এমন সিচুয়েশন “হরর” সিনেমায় দেখা মেলে।
Breathe Into the Shadows – এর মূল গল্প ছিল বেশ চমকপ্রদ। কিন্তু তার এক্সিকিউশনে ঘাটতি থাকায় দর্শকের মন জয় করতে অক্ষম। Amazon Prime Video – র ভারতীয় কন্টেন্ট নিয়ে দর্শকের প্রত্যাশা অনেক। আর এই প্রত্যাশা বাড়িয়েছে “ফ্যামিলি ম্যান”- এর মতো সিরিজ। তাই তাকে ধরে রাখতে হলে আর সচেতন হতে হবে।
আরও পড়ুনঃ অনুষ্কা শর্মার প্রযোজিত ছবিতে কেন ভূতেরা স্থান পায় না?
Breathe Into the Shadows – এর সিনেমাটোগ্রাফি ভাল হলেও ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর খুব খারাপ। এপিসোড বা সিচুয়েশন অনুযায়ী সাস্পেন্স একদম ধরে রাখতে পারেনি। উত্তেজনা তৈরি করেও সময়ের আগে ছেড়ে দিয়েছে বহুবার। এই সিরিজে কাজ করেছে নিত্যা মেনন, সিয়ামী খের, ইভানা এবং অন্যান্যরা। নিত্যা মেনন চলনসই। তবে হৃষিকেশ চমৎকার। তাকে দিয়ে পরিচালক বেশ অনেকটা কমিক রিলিফ দিয়েছে অদ্ভুত সুন্দর ভাবে। যা এই সিরিজের অন্যতম প্রাপ্তি। পরিশেষে একটাই কথা সিরিজের এপিসোড সংখ্যা কমিয়ে তার দৈর্ঘ্য কমানো যেতেই পারে তাতে অনেক টানটান হবে। এ বিষয়ে ভাবার অবকাশ অনেক।